জাবি প্রতিনিধি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এক নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে ’গণঅভ্যুত্থানের সরকার প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শিরোনামে এক আলোচনায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘অনেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো মনে করেন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। দীর্ঘ দিনের স্বৈরাচারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য।’
তিনি বলেন, ‘এবারের আন্দোলন শুরুতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছিল না। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন শুরু হলেও ৩৬ দিনের আন্দোলন বিচার করলে এ আন্দোলন বোঝা যাবে না। ওয়ান ইলেভেন থেকে যে আওয়ামীলীগ ফ্যাসিবাদী হবার সুযোগ পেয়েছে , এরপর তারা সংবিধান পরিবর্তন করে, ক্ষমতাকে নিজেদের কুক্ষিগত করে ফেলে। নিজেদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে তারা সবধরনের অপকর্ম করেছে। ফলে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছিল এই আন্দোলন।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, আন্দোলনের সময় যখন আমাদের মনে হতো আমরা পরাজিত হয়ে যাচ্ছি তখন জাহাঙ্গীরনগর আমাদের পথ দেখাতো। আমরা জাহাঙ্গীরনগরের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এ বৃহত্তর সাভার- আশুলিয়ায় যে আন্দোলন হয়েছিল সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিয়েছিল।
এসময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘আমরা যদি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদী বলি তাহলে তাকে সম্মান করা হয়। হাসিনা যা করেছে তা ফ্যাসিস্টরা করেনা, এগুলো করে ক্রিমিনালরা।
হাসিনা মূলত ক্রিমিনাল, মাফিয়া ও ডাকাত ছিল।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা পাহাড়ের মতো, কিন্তু প্রত্যাশার বিন্দু পরিমাণ পুরণ হয়নি এখনও। মুজিববাদীরা সংবিধানে বলেছে গণতন্ত্রের কথা কিন্তু তারা করেছে ভোট চুরি।তারা সংবিধানে বলেছে সমাজতন্ত্রের কথা কিন্তু তারা হরণ করেছে মানুষের অধিকার।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘৭১ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে পারিনি বলে আমাদের ২৪ দেখতে হয়েছে। এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা, বৈচিত্র্যের নামে বিভাজনের সময় এখন নয়।’
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ( শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ মো. আব্দুর রব। এছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।