অপহরণের ১৬ দিন পর বান্দরবানের রুমা উপজেলা থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট ও ঠিকাদার আনোয়ারুল হককে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা।
ছাড়া পেয়ে তিনি আজ শুক্রবার (৩১ মার্চ) বেলা একটার দিকে রুমার বগালেক সেনা ক্যাম্পে পৌঁছান। তাঁর মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন। পাহাড়ের নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা তাঁকে ১৫ মার্চ অপহরণ করেছিল।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা ও পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা যায়, অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আনোয়ারুল হককে কেএনএফের গোপন আস্তানা থেকে সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুর্গম পাহাড়ি পথে হেঁটে তিনি বগালেক সেনা ক্যাম্পে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি বগালেক থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রুমা উপজেলা সদরে এসে পৌঁছান বলে নিশ্চিত করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। সার্জেন্ট আনোয়ার সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন বলেও জানান তাঁরা।
অপহৃত অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আনোয়ারুল হকের ছোট ভাই নবী হোসেন জানিয়েছেন, তাঁর বড় ভাই অপহৃত হওয়ার পর পুরো পরিবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। তখন থেকে বিভিন্নজনের মাধ্যমে অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে আনোয়ারকে ছাড়তে রাজি হয় অপহরণকারীরা। ওই টাকা লোকজনের মাধ্যমে অপহরণকারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পর আনোয়ারুল হককে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁকে নেওয়ার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার পরিবারের সদস্যরা রুমা উপজেলা এসেছেন। তাঁদের বাড়ি ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জে।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেছেন, দুপুরে আনোয়ারুল হককে অপহরণকারীরা ছেড়ে দিয়েছে। তিনি এসে পৌঁছালে তাঁর কাছ থেকে অপহরণের ব্যাপারে জানা যাবে। তবে মুক্তিপণের ব্যাপারে পরিবার থেকে কোনো কিছু বলা হয়নি বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আনোয়ারুল হক সেনাবাহিনী থেকে বছরখানেক আগে অবসর নেওয়ার পর ঠিকাদারি কাজ করে আসছেন। ১৫ মার্চ তিনি নির্মাণাধীন বগালেক-কেওক্রাডং-ধুপপানিছড়া সড়কে ঠিকাদারি কাজ দেখাশোনা করতে গিয়েছিলেন। তখন পাসিংপাড়া ও সুংসংপাড়ার মাঝামাঝি স্থান থেকে তাঁকে দুই ট্রাকচালকসহ কেএনএফের সদস্যরা অপহরণ করে। পরে দুই ট্রাকচালককে মুক্তি দিলেও আনোয়ারুল হককে কেএনএফ তাদের গোপন আস্তানায় আটকে রাখে।