বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমি কারও খাই না। কেউ এসে অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করুক, এগুলো আমরা মেনে নেব না। দ্রুত উন্নয়নের কারণে আমরা অনেকের চক্ষুশূল হয়ে গেছি।
তিনি বলেন, বিদেশিদের কাছে গিয়ে দেশের বিষয়ে প্রশ্ন করা বেখাপ্পা দেখায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এমপি ও মন্ত্রী বানিয়েছেন। আমি আগে রাষ্ট্রদূত ছিলাম। কিন্তু কোন দেশে তাদের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে প্রশ্ন করিনি। বাংলাদেশে বিদেশি রাষ্ট্রদূতের এসব কাজ নয়।
শনিবার (০৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ডিক্যাব টকে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই-একটা রাজনৈতিক দল না আসলেও বেশিরভাগ দলই নির্বাচনে আসে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিদেশিদের নিজের দিকে তাকানো উচিত। আমেরিকায় সন্ত্রাসী দল নির্বাচন করতে পারে না। আমাদের দেশে সন্ত্রাসী দল থাকতে পারে, তারা না আসলে কিছু যায় আসে না।
গত কয়েক বছরে দু-একটি বাদে সবকটি নির্বাচন স্বচ্ছ হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতেও আমরা স্বচ্ছ নির্বাচন করব। তবে স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সব দল-মতের ইচ্ছা ও প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণের দিক থেকে উন্নত দেশের থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলোতে ২৬-৩০ শতাংশ মানুষ ভোট দেয়। আমাদের দেশে ৭০ ভাগ মানুষ ভোট দেয়।
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সংলাপ কার সঙ্গে করব? সন্ত্রাসীর সঙ্গে কথা বলব না। তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় কোনো সংলাপে ভালো অর্জন হয়েছে কি না জানা নেই। আমাদের দেশে একটা নেতিবাচক সংস্কৃতি দাঁড়িয়েছে, নির্বাচন বিদেশিদের ডেকে এনে দেখানো। ভবিষ্যতে এ ধরনের অপসংস্কৃতির চর্চা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, অতীতে সংলাপ করে কোনো লাভ হয়নি। তবে ভালো প্রস্তাব হলে আলোচনা হতে পারে। বাংলাদেশ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের ভেতরে জনগণের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা অবশ্যই হতে পারে।
মানবাধিকার, গণতন্ত্র, গুম এগুলা সব ভাঁওতাবাজি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশেই মানুষ হারিয়ে যায়, আবার ফিরে আসে। তারা বলে আমাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়। অথচ আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখে না।
ড. মোমেন বলেন, আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এত মানুষ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য জীবন দেয়নি। বিদেশিদের এটা জানা উচিত।
তিনি আরও বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা দেশে আসেন দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন করতে। কিন্তু অনেক সময় তারা এমন সব কথা বলেন, যা অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের শামিল।