সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে গতকাল ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনার বর্ণনা আপিল বিভাগের কাছে তুলে ধরেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এসময় তাঁরা প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এবারের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন ও সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস। প্রধান বিচারপতির কাছে সমিতির এবারের নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এ সময় আপিল বিভাগের অপর সাত বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন।
বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে প্রধান বিচারপতির কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন বিএনপিপন্থী এই দুই আইনজীবী। এ সময় আপিল বিভাগের সামনের করিডরে অর্ধশতাধিক বিএনপিপন্থী আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে হাইকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে গিয়ে তাঁদের পক্ষ থেকে ব্রিফিং করা হয়।
দুপুর ১২টার দিকে হাইকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে এক ব্রিফিংয়ে রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা আধা ঘণ্টা ধরে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। তাঁরা বলেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেলকে ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি। আমরা যাওয়ার পর তাঁরা তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন। করণীয় থাকলে এ সম্পর্কে জানাবেন।’
ব্রিফিং শেষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা মিছিল নিয়ে সমিতি প্রাঙ্গণে ভোটের প্যান্ডেল–সংলগ্ন স্থানে জড়ো হলে সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গে আবার ধাক্কাধাক্কি হয়।
এসময় আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা ‘সাদা, সাদা’ বলে স্লোগান দেন। অন্যদিকে ‘ভোট চোর, ভোট চোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
সুপ্রিম কোর্ট–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপিপন্থী দুই আইনজীবী চলে যাওয়ার কিছু সময় পর প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এবারের নির্বাচনকে (২০২৩-২৪) কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ গিয়ে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের পিটিয়ে মিলনায়তন থেকে বের করে দেয়। পুলিশের হামলায় আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এদিন ধাক্কাধাক্কি, মারধর, ভাঙচুর ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পরে ভোট শুরু হয়। আজ দ্বিতীয় ও শেষ দিনের ভোট গ্রহণ চলছে। এমন অবস্থায় গ্রহণযোগ্য কমিটি করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।