নগর ভবন ঘেরাও করে ময়লা আবর্জনা ফেলে নাসিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিক্ষোভ চলাকালে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী কর্তৃক চাকরি খাওয়ার হুমকির ঘটনায় সকলের কাছে ক্ষমা চান আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একেএম শামীম ওসমান।
গতকাল বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় কানাইনগর সোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের নবীনবরণ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইভীর বক্তব্যকে ‘রুঢ় আচরণ’ আখ্যা দিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান তিনি। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা পশ্ন করেন আপনাদের নৌকা মার্কার একজন মেয়রের কাছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা গিয়েছিলেন। সেখানে পুলিশ দিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হলো। তাদের বলা হলো ‘ভাত খাইতে ভাত পাস না, ফোন কিনস কই থেইক্যা।’
এটার উত্তর আমি দেব না, আমি উত্তর দেই, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে কোথাও কেউ ভাত না খেয়ে নেই শেখ হাসিনার আমলে। ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে টাকা নেই, এত বাড়ি কোথা থেকে হলো সে প্রশ্ন কে করবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা জানি আমরা নৌকার জন্য ভোট চেয়েছিলাম। আমি নারায়ণগঞ্জের একজন সামান্য কর্মী। আমরা বঙ্গবন্ধুকে চিনেছি তার আদর্শকে চিনেছি। তুই তুকারি আল্লাহ পছন্দ করে না। আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।
শামীম ওসমান বলেন, যাদের বলা হয়েছে চাকরি খেয়ে দিবো, আমি তাদের সবার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরাও মানুষ।
এ সময় তিনি আরও বলেন, পুলিশকে গালি দেন যারা তাদের পুলিশের পাহারায় থাকতে হয়। আমাদের ওসামানীয় সাম্রাজ্য বলা হয়। আমার দাদা এমপি ছিল, বাবা এমপি ছিল। আমরা তিন ভাই এমপি হয়েছি। আমরা সাম্রাজ্য কায়েম করেছি সত্যি। কারো জমি দখল করিনি। মানুষের মনে জায়গা করে সাম্রাজ্য গড়েছি।
আমাকে বিভিন্নভাবে গালাগালি করা হয়। ৩০ বছর আগে হলে জবাব দিলে শহরে থাকতে হতো না। যারা গালাগালি করে আমার তাদের প্রতি মায়া লাগে। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত করে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৪) মার্চ বিকেল ৩টায় নগর ভবন ঘেরাও করে পরিচ্ছতান্নকর্মীরা ঝাড়ু নিয়ে প্রতিবাদ স্বরুপ ময়লা আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন।
নগর ভবনের সামনে ময়লা ফেলে আন্দোলন করায় উত্তেজিত হয়ে আইভী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাও করো, মেয়রকে ঘেরাও করে রাখতে চাও করো। এই নগর ভবনে ময়লা ফেলার দুঃসাহস দেখালে কেন? আর খাইতে ভাত পাওনা, আন্দোলন করো, এত দামি মোবাইল পাইলা কই?
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনসহ কোনো সিটি করপোরেশনেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাকরিতে স্থায়ী না। সরকার কাউকেই স্থায়ী করে নাই, তোমাদের আমি রাখলেও রাখতে পারি, নাও রাখতে পারি।
এ সময় মেয়র আইভী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি শিমুল দাস, সাধারণ সম্পাদক কিশোর লালসহ সেখানে উপস্থিত মামুন চন্দ্র দাসকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন।