রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়া এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কটুক্তি করা সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা।
সোমবার(৭ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ গেইটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ দাবি তুলে ধরেন।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা এ সময় ‘শহীদদের নামে মিথ্যাচার চলবে না’ , ‘ঊর্মির বহিষ্কার করতে হবে’ ‘সাঈদ ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘ হাসিনার দোসরা, হুশিয়ার সাবধান’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদ আবু সাঈদসহ শহীদদেরকে যে কটূক্তি করেছে আমরা তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। আমরা জানান দিতে চাই; আবু সাঈদ শহীদ হলেও তার সহযোদ্ধারা এখনো বাংলার মাটিতে আছে। তাকে নিয়ে কটূক্তি করলে সেটি আমরা মেনে নেব না। আমরা তার স্থায়ী চাকরিচ্যুত ও বহিষ্কার চাই। নতুবা আমরা কঠোর অবস্থান নেব। আমরা ‘উত্তরবঙ্গ বক্লেড ও লংমার্চ টু লালমনিরহাট’ কর্মসূচি ঘোষণা করব।
তারা আরও বলেন, দেশে এখনো আওয়ামী লীগের দোসরা আছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে। তা না হলে একজন মানুষ কতটা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিলে এমন পোস্ট দিতে পারে। এই ধরনের পোস্টকে নির্বুদ্ধিতার পরিচয় বললেও ভুল হবে। এটা ষড়যন্ত্রমূলক পোস্ট।
উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালেয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ বলেছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি।
ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘মানে কত বড় বোকার স্বর্গে আছি এইটা শুধু চিন্তা করি। আবু সাইদ! বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী একটা ছেলে যে কী না বিশৃংখলা করতে গিয়ে নিজের দলের লোকের হাতেই মারা পড়লো সে নাকি শহীদ! এটাও এখন মানা লাগবে!’
উর্মি আরও বলেন, ‘আর এই আইন ভঙ্গকারী সন্ত্রাসীর জন্য দেশের অথর্ব অতি প্রগতিশীল সমাজ কেঁদে কেটে বুক ভাসিয়েছে। তখন যাকেই বলার চেষ্টা করেছি পুরো ঘটনা তদন্তসাপেক্ষ, সেই দশটা কথা শুনিয়ে দিয়েছে। প্রশাসনে থেকে সরকারের দালাল হয়ে গিয়েছি এ কথা বুঝানোর তো বাকিই রাখনি।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লিখেছেন, ‘এই যে একটা সন্ত্রাসীর মৃত্যুকে অজুহাত বানিয়ে কত নিরীহ পুলিশ ভাইদের হত্যা করা হলো তার দায়ভার কি এই অথর্ব সমাজ নিবে? এই ছেলের জন্য প্রধান উপদেষ্টা তার দলবল নিয়ে চলে আসলেন রংপুর। লালমনিরহাট থেকে এই উপদেষ্টা দলের জন্য আবার পাঠাতে হয়েছে গাড়ি। রংপুরের বাকি সাত জেলা থেকেও গাড়ি পাঠাতে হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই আহাম্মকি ভ্রমণের জন্য এত বড় গাড়িবহর পুরো বিভাগ থেকে যে গেল তার তেল খরচ কে দিয়েছে? যাই হোক, ভিডিওটা দেখুন। ভালো মতো দেখুন আর মুখস্থ করুন। আর কী বলব!’