বিশ্বের শীর্ষ জঙ্গি সংগঠন খ্যাত আল–কায়েদার মতাদর্শে অনুপ্রাণিত ছয় হিজরতকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে সশস্ত্র জিহাদের পরিকল্পনা করছিলেন এই আটককৃতরা, জানিয়েছে সিটিটিসি।
সিটিটিসির তথ্য অনুযায়ী, অনলাইনে জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে তাঁরা জিহাদের জন্য অনুপ্রাণিত হন। গতকাল রবিবার রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসির প্রধান) মো. আসাদুজ্জামান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—আবদুর রব (২৮), মো. সাকিব (২৩), মো. শামীম হোসেন (১৮), মো. নাদিম শেখ (১৯), মো. আবছার (২০) ও মো. সাইদ উদ্দিন (১৮)।
সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনভিত্তিক অ্যাপে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করতেন। তাঁরা স্থানীয় সহযোগীদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে জঙ্গিবাদের জন্য টেকনাফে হিজরত করে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের আরও সহযোগী রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, হিজরতকারীদের সমন্বয়ক মাওলানা আবদুর রব। তিনি কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। ২০১৯ সালের জুন মাসে সৌদি আরবে চলে যান। সৌদিতে অবস্থানকালে তিনি অনলাইনে বিভিন্ন জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে জিহাদের জন্য অনুপ্রাণিত হয়। অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি ভিডিও কমেন্টের সূত্র ধরে সাঈদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। একইভাবে শামীম, সাকিব, নাদিমসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে পরিচয় হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান আরও জানিয়েছেন, আবদুর রব সমন্বয়ক হয়ে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরিয়াহভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, জিহাদ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন। পরবর্তী সময় অনলাইনে বিদেশে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি সহযোগীর সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। অডিও-ভিডিও কলে তাঁরা যোগাযোগ স্থাপন করেন। বিদেশে অবস্থানরত ওই ব্যক্তি সবাইকে হিজরত করে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। পরবর্তী সময় সেই সদস্য লিবিয়ায় অবস্থানরত আরও একজন বাংলাদেশি এবং টেকনাফের স্থানীয় একজনের সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেন।
সম্মিলিত আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় আবদুর রব, শামীম, সাকিব, নাদিম, সাইদসহ অন্য যাঁরা হিজরতে রাজি, তাঁরা প্রথমে টেকনাফ গিয়ে তাঁদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেবেন। পরবর্তী সময় তাঁরা বাংলাদেশে ইসলামি শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবে।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।