হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নেতৃবৃন্দ ‘কারা নির্যাতিত মজলুম ওলামায়ে কেরামের ব্যানারে গণমাধ্যমে সোমবার (৩১ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতি পাঠিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, গত ২৮ জুলাই শুক্রবার বাইতুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগের কথিত শান্তি সমাবেশ শেষে দুইপক্ষের সংঘর্ষের সময় যাত্রাবাড়ী জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ার জালালাইন জামাতের ছাত্র হাফেজ রেজাউল করিম নামের এক কওমী ছাত্রকে খুন করা হয়েছে। আমরা এই নৃশংস হত্যাকান্ডের এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ওলামায়ে কেরাম আরো বলেন, শহীদ রেজাউল করিম একজন পবিত্র কুরআনের হাফেজ। কওমী মাদরাসার তরুণ শিক্ষার্থী । তার গ্রামের বাড়ি শেরপুর নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়া গ্রামে। মাদরাসায় পড়া লেখার পাশাপাশি পারিবারিক অসচ্ছলতার কারনে প্রতি শুক্রবার জুমার সময় বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে আতর, টুপি, তসবিহ ইত্যাদি বিক্রি করে নিজের ও পরিবারের খরচ জোগাতেন। নিহত হাফেজ রেজাউল করিম একজন নিরীহ ছাত্র। তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। সে একজন পথচারী মাত্র। তারা বলেন, প্রত্যেক নাগরিকের চলাফেরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। অথচ সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরাই খুন করল একজন হাফেজে কুরআনকে। এই ঘটনাই স্পষ্ট প্রমাণিত যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের কাছে কোন নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা নেই।
তারা বলেন, এই সরকার ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে আলেম উলামা ও তৌহিদী জনতার উপর গণহত্যা চালিয়েছিলো। ২০২১ সালে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ২০২১ সালে হাটহাজারী ও বিবাড়ীয়ায় ২৪ জন নিরাপরাধ আলেম, মাদ্রাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হত্যা করেছে।
তারা বলেন, অবিলম্বে নিরাপরাধ হাফেজ রেজাউল করিম এর হত্যাকান্ডে জড়িত খুনীদের গ্রেফতার করে ফাঁসি দিতে হবে। এবং নিহত রেজাউল করিমের পরিবারকে যথাযত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকার যদি রেজাউল করিম হত্যার বিচার না করে তাহলে সারাদেশে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আগুনের দাবানল জ্বলে উঠবে।
হেফাজতের মজলুম ওলামায়ে কেরাম বলেন, মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীসহ আরো অনেক প্রতিবাদী আলেম এখনো বিনা বিচারে মিথ্যা-বানোয়াট মামলায় কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। কারাগারে তাদেরকে নানারকম হয়রানি ও অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে।
আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও মুক্তি পাচ্ছেনা। আইন-আদালতকে নিপীড়নের হাতিয়ার বানানো হয়েছে। কারাগারের বাইরেও পুরো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটি স্বাধীন মাতৃভূমিকেও আজ কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটছে। অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করতে দেয়া হচ্ছেনা। আমরা অবিলম্বে কারাবন্দি সকল আলেমের মুক্তি চাই।
তারা সরকারের সদয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অত্যাঢার নির্যাতন বন্ধ করুন। বন্দি আলেমদের মুক্তি দিন। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। সকল নাগরিকের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার ফিরিয়ে দিন । অন্যথায় আমরা সকল ইসলামী জনতাকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কঠিন কর্মসূচী দিয়ে মাঠে নামতে বাধ্য হব।।
বিবৃতিদাতারা হলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নেতা মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ,মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী,
মাওলানা মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মুফতি হারুন ইজহার, মাওলানা মোহাম্মদ জোবাইর, মাওলানা কুরবান আলী কাসেমী,মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা নাসিরুদ্দিন মুনির, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মুফতি হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জি, মাওলানা মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী, মাওলানা গাজী ইয়াকুব ওসমানী, মুফতি শরীফ উল্লাহ,মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা হাফেজ এহতেশামুল হক সাখী, মাওলানা শরিফ হুসাইন, মাওলানা হাফেজ সানাউল্লাহ, মাওলানা আসাদুল্লাহ, মাওলানা এনামুল হাসান ফারুকী, মাওলানা মঞ্জুরুল হাসান নাদিম প্রমুখ।