দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর ও পেরুতে ৬.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ জন ইকুয়েডরের ও একজন পেরুর নাগরিক বলে জানা যায়।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৮ মার্চ) ইকুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চল এবং পেরুর উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এদিকে ভূমিকম্পের জেরে সেখানে একাধিক বাড়ি, স্কুল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রের কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
রোববার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ইকুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চল এবং পেরুর উত্তরাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৬.৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)।
মূলত গুয়াস প্রদেশের বালাও শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠের ৬৬.৪ কিমি (৪১.৩ মাইল) গভীরতায় আঘাত হানে ভূমিকম্পটি। অবশ্য ভূমিকম্পের কারণে সুনামি হওয়ার কোনও আশঙ্কা দেখা যায়নি বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘আজ সকালে ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করার জন্য আমরা এলাকায় অবস্থান করছি। আমি নিশ্চিত করতে চাই, আমি আপনাদের সাথে আছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আমার সংহতি ও অঙ্গীকার প্রকাশ করছি।’
ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্সির যোগাযোগ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ১৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আরো ৩৮০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই এল ওরো প্রদেশের।
সংস্থাটি আরো জানায়, ভূমিকম্পের জেরে কমপক্ষে ৪৪টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আরও ৯০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৫০টি শিক্ষা ভবন এবং ৩০ টিরও বেশি স্বাস্থ্য কেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের জেরে সৃষ্ট ভূমিধসের কারণে একাধিক রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া সান্তা রোসা বিমানবন্দরের সামান্য ক্ষতি হলেও সেটি চালু রয়েছে।
এছাড়া রাষ্ট্র-চালিত তেল কোম্পানি পেট্রোইকুয়েডর ভূমিকম্পের পর সতর্কতা অবলম্বন করে একাধিক স্থাপনা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে এবং কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। কিন্তু সংস্থাটি কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর দেয়নি।
ইকুয়েডরের জিওফিজিক্স ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, প্রাথমিক ভূমিকম্পের পরের কয়েক ঘণ্টায় দুই দফায় দুর্বল আফটারশক হয়েছে।
অন্যদিকে পেরুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষ বা কাঠামোগত ক্ষতির বিষয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।