মধ্যপ্রাচ্যের সংকট ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। গত সপ্তাহে ইরানের ইস্পাহান প্রদেশে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাটি ইসরায়েল থেকে চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের এ হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে এমন একটি অঞ্চলকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মার্কিন বার্তা সংস্থাগুলো বলেছে, ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে। তবে হামলার বিষয়ে নিশ্চিতভাবে সম্মতি বা অস্বীকার কোনো কিছুই করেনি ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল।
ইরান এই অঞ্চলে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইসরায়েলের ওপর ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানোর এক সপ্তাহ পরেই বিস্ফোরণগুলো ঘটেছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসি ইরানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে এমন একটি অঞ্চলের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করেছে।
হামলাগুলো যুদ্ধবিমান থেকে চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্যাটেলাইট চিত্রে ইস্পাহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত রুশ অরিজিন ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ‘এস-৩০০’ অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যাটারি দেখা গেছে। ছবিগুলোতে ১৫ এপ্রিল গোপন সুবিধায় অবস্থিত এস-৩০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দেখা গেছে। ১৯ এপ্রিল থেকে গুগল আর্থের সর্বশেষ ছবিতে স্থানটিকে খালি দেখাচ্ছে।
আর এখানে এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নোও চিহ্ন নেই৷ নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাটি যেখানে হামলা করা হয়েছে তার উত্তরে অবস্থিত।
বিবিসি তার বিশ্লেষণের জানিয়েছে, এই সিস্টেমে রাডার, স্বতন্ত্র ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ও অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত বেশ কয়েকটি যান রয়েছে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এই সিস্টেমে আঘাত করেছিল বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলের অস্ত্র ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়েছে এবং অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সজ্জিত একটি অঞ্চলে তা আঘাত করেছে বলে বিশ্লেষণে দাবি করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ইরানের দুই কর্মকর্তা বলেছেন, শুক্রবার ইরানের সেনাবাহিনী ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমানসহ ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশের কিছু শনাক্ত করতে পারেনি। এখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি এবং ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়নি।
বিবিসি জানিয়েছে, এস-৩০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রাডার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মিসাইল লঞ্চারগুলো অক্ষত ছিল।
নিউইয়র্ক টাইমস পশ্চিমা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইরানকে বার্তা দিতেই মূলত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েল চাইলেই তেহরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিতে পারে। তবে ক্ষেপণাস্ত্র বা যুদ্ধবিমান যেটি নিক্ষেপ করেছিল তা জর্ডানের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি।
রাশিয়া বছরের পর বছর ধরে আলোচনার পর ২০১৬ সালে ইরানকে এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সরবরাহ করে।
সবচেয়ে শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সরবরাহ ইসরায়েলের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ২০১০ সালে পশ্চিমের চাপের কারণে রাশিয়া ইরানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল।