আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই আক্রমণকারী হবেন না। বিরোধীরা আওয়ামী লীগকে আক্রমণকারী হিসেবে দেখাতে চাইছে।
রবিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের এক যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও দীপু মনি; সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী; দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া; প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর; ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন যেকোনোভাবে দেখাতে চায় যে আমরা আক্রমণকারী। কেরানীগঞ্জের ঘটনায় আক্রমণকারী তারা, অথচ তারা বিদেশিদের কাছে প্রচার করেছে যে আক্রমণকারী হচ্ছে আওয়ামী লীগ। কাজেই কোনো অবস্থাতেই মাথা গরম করবেন না। বাংলাদেশের জনগণ আমাদের সঙ্গেই আছে।
তিনি জানান, গাজীপুরে সিটি করপোরেশনের ভোটে আওয়ামী লীগ হেরে গেলেও নির্বাচন গণতান্ত্রিক ও অবাধ হয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে কেউ কিছু বলতে পারেনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে জয়ী করেছি সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন করে। সামনে বরিশাল, খুলনা এবং রাজশাহীতে ইলেকশন আছে, এই নির্বাচনগুলোও অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে। শেখ হাসিনা সরকারের নীতি হচ্ছে, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে হবে। জনগণ ভোট দিলে আছি, ভোট না দিলে নেই। আমরা আমাদের এই নীতিতে অটল থাকব।
নতুন মার্কিন ভিসা নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে কেউ যেন বাধা না দিতে পারে এ কারণে মার্কিন ভিসা নীতি। এ কারণে আওয়ামী লীগের মাথাব্যথার কোনো কারণ নেই৷ যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে। অথচ তারা ঘোষণা করে বাধা দিচ্ছে।
কেরানীগঞ্জে যে নাটক সাজাল, আওয়ামী লীগের অফিস আক্রমণ করে ভাঙচুর করল, নাটক সাজিয়ে ইচ্ছা করে ওখানে গোলমালের সৃষ্টি করল। খাগড়াছড়িতেও তা–ই, আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে। তাদের এটা লক্ষ্য, অথচ তারা বোঝাতে চায় যে আওয়ামী লীগ বাধা দিচ্ছে।
আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করবে এবং তা শান্তিপূর্ণ থাকবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নেত্রীর নির্দেশ, সকল জেলা, মহানগর, ইউনিয়ন, প্রয়োজনে ওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। আপনাদেরকে আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, যেহেতু আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, সে জন্য এই শান্তি সমাবেশ। কারও সঙ্গে পাল্টাপাল্টি মিটিং, সমাবেশ করা আমাদের রাজনীতি নয়।
সহযোগী সংগঠনগুলোকে আওয়ামী লীগের সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন সবার ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকতে হবে। কোনো ছাড় নেই। আওয়ামী লীগ আক্রমণ করবে না। কিন্তু আক্রমণ এলে ছেড়ে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকবে। নিজেরা নিজেদের সঙ্গে লড়াই করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চায়ের দোকানে বসে নিজের দলের লোকের নামে গিবত করবেন, এটা আওয়ামী লীগ নয়। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী-নেতা তা করতে পারে না। যারা প্রার্থী আছেন, একসঙ্গে জনসংযোগ করে নৌকার পক্ষে ভোট চাইবেন। দলীয় সভাপতি, মনোনয়ন বোর্ড যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষে কাজ করতে হবে। আমরা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী রাখব, নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।
বিএনপির সরকার তাড়ানোর হুমকির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কে কাকে তাড়ায় সেটা দেখা যাবে। বাংলাদেশের মানুষ বুঝিয়ে দেবে। ভোটে বাধা দিতে এলে ভালোভাবে বুঝিয়ে দেবে।
আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদলের চীন সফর এবং সম্ভাব্য ভারত সফর নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এগুলো পার্টি টু পার্টি কন্টাক্ট। এসব বৈঠকে অনেক কিছু আলোচনা হতে পারে।