আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায়। খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখানো, তাদের (বিএনপি) পরিকল্পনার অংশ। কিছু দিন আগে বিএনপি নেতারা বলছিলেন যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানো না হলে তার জীবন শঙ্কার মধ্যে পড়বে। কিন্তু এর মধ্যেই আমরা দেখতে পেলাম, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে চলে গেছেন এবং বলেছেন তিনি খুব ভালো আছেন।
রবিবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমনটা জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, গণমানুষের সংগঠন যদি ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বিমুখ থাকে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, সেই সংগঠন আর গণমানুষের থাকে না। কর্মী নির্ভর স্বার্থরক্ষার সংগঠনে রূপ নেয়। আসলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন চান তার বা তাদের স্বার্থরক্ষার জন্য বিএনপি একটা লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে থাকুক। সে কারণেই তিনি বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিতে চান না।
তিনি বলেন, এ ধরনের বাগাড়ম্বর ১৪ বছর ধরে শুনে আসছি। মানুষের কাছেও এগুলো হাস্যকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির এ ধরনের হুমকি-ধামকি তাদের কর্মীরাও বিশ্বাস করে না।
বিএনপি মহাসচিবের –’আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিশ্বাস করে না’- এই বক্তব্যে বিরুদ্ধে নিজের মতামত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় গেছে। আমরা জনগণের শক্তিতে, জনগণের রায়ে বিশ্বাস করি। বিএনপি বরং নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। সে জন্য তারা নির্বাচন বর্জন করছে। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কী করবে না, সেটি তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাচসাস কার্যনির্বাহী কমিটির সাক্ষাৎ: সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তারা বিএফডিসিতে বাচসাসের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন কমিটিতে এবং বিদেশ সফরে তাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি সম্বলিত একটি পত্র মন্ত্রীকে দেন। এ সময় মন্ত্রী চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির অবদান ও ধারাবাহিক পুরস্কার প্রদানের প্রশংসা করেন। তাদের উত্থাপিত দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে এক হাজার কোটি টাকার সহজ ঋণ তহবিল গঠন করেছেন। চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এফডিসিতে নতুন ভবন নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
তিনি জানান, সেখানে চারটি শুটিং ফ্লোর থাকবে। সেখানে একটা সিনেমা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে। এছাড়া গাজীপুরে বঙ্গবন্ধুর ফিল্ম সিটি হচ্ছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ হলে সেখানেও সিনেমা নির্মাণ করা যাবে।’
আসন্ন কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেশের অংশগ্রহণ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সিনেমাকে বিশ্ব অঙ্গনে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই আমরা এবার প্রথম কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্টল নিয়েছি। সেখানে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব, দ্য মেকিং অব অ্যা নেশন’ প্রদর্শনের সম্ভাবনা আছে।
সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলে বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সহ-সভাপতি অঞ্জন রহমান ও রাশেদ রাইন, সহ-সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল, অর্থ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম মিলন, সমাজকল্যাণ ও মহিলা সম্পাদক আনজুমান আরা শিল্পী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হুরায়রা মুরাদ, নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঈনুল হক ভূঁইয়া, আনিসুল হক রাশেদ, রুহুল সাখাওয়াত প্রমুখ।