বেগম খালেদা জিয়ার থাকার কথা কারাগারে, বাইরে থাকার কথা নয় বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি শাস্তিপ্রাপ্ত, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন।
গতকাল বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে কনফেডারেশন অব ফিল্ম, টিভি অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া প্রফেশনালস প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে নিয়মিত দেখা করেন, যোগাযোগ করেন এবং তার দলের নেতারাও যান। এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি বড় মহানুভবতা। মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ওনারা বুঝি সেটি টের পাচ্ছেন না যে, প্রধানমন্ত্রী কি রকম মহানুভবতা দেখিয়েছেন। তাকে বাইরে থাকার ব্যবস্থাটা যদি বাতিল করা হয় তখন সম্ভবত তারা টের পাবেন যে বেগম জিয়ার জন্য কি পরিমাণ মহানুভবতা শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন।
বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি মহানুভবতা দেখাতেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে তার বাড়ির সামনে গিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা দাঁড়িয়ে থাকার পর দরজা খোলেন নাই, যেখানে ১৫ আগস্ট জন্মদিন না হওয়া সত্ত্বেও তিনি কেক কাটেন, যেখানে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পর সেটা নিয়ে হাস্যরস করেন, সেখানে বেগম জিয়া এ ধরনের সহানুভূতি দেখাতেন না, সেটা খুবই স্পষ্ট।
বিদেশে দেশবিরোধী প্রচারণা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশে বিএনপির পেইড এজেন্টরা নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। কদিন আগে গুজব ছড়িয়েছিল যে ব্যাংকে টাকা নাই। এ জন্য হুড়মুড় করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেলার হিড়িক শুরু হয়েছিল। এই গুজবগুলো সরকারের বিরুদ্ধে নয়, বিএনপি এবং তাদের পেইড এজেন্টরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। তবে এতে তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। আমরা গুজব নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।
বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে গোলযোগ নিয়ে প্রশ্নের জবাএ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, দেখুন বিএনপি যেখানে সমাবেশ করে সেখানে নিজেরাই মারামারি করে, চট্টগ্রামে দুই গ্রুপ মারামারি করেছে, মারামারি করে ওদের পার্টির অফিস ভাঙচুর করেছে, বিভিন্ন জায়গায় এসব ঘটনা ঘটছে। আর যে সমাবেশগুলোর মাধ্যমে তারা সরকারকে টেনে নামানোর কথা বলছে, সরকারের পদত্যাগ চাওয়া হচ্ছে, সেখানে সরকার সব নিরাপত্তা বিধান করছে, যাতে তাদের সমাবেশে কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। কিন্তু মাঝেমধ্যে তারাই পুলিশের ওপর চড়াও হয়।
জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব ও কনফেডারেশনের সভাপতি সাদেক সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর অপু, নেতাদের মধ্যে ইফতেখার আলী এবং সালাম চৌধুরী প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকী বলেন, দেশকে নিয়ে একটি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। দেশের বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করলে এই কনফেডারেশন তাদের রুখে দাঁড়াবে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সহযোগী ভূমিকা পালন করবে।
সভায় সাদেক সিদ্দিকী কনফেডারেশনের পক্ষে মন্ত্রীর কাছে নয় দফা দাবি সম্বলিত একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। এফডিসির ক্যামেরা ও লাইট ভাড়ার হার প্রচলিত বাজার অনুযায়ী পুনর্নির্ধারণ, সেন্সর বোর্ডসহ বিভিন্ন কমিটিতে কনফেডারেশনের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তি, জাতীয় পুরস্কারে প্রোডাকশন, লাইট ডিজাইনারদের অন্তর্ভুক্তি, শুটিং ইউনিটের গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচলের দাবিগুলো মন্ত্রী বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন।