সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ করছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে তারা আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবন থেকে টিবি হাসপাতালের রাস্তা অবরোধ করে, ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়।
আহতরা জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকেই তারা সেখানে অবস্থান নিচ্ছিলেন। সকাল থেকে তারা আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবন, ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন এবং সড়ক অবরোধ করেন। তবে রোগী ও অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা দেওয়া হয়নি।
দুপুরের দিকে তারা মিরপুর সড়কও অবরোধ করেন। আন্দোলনকারী সাব্বির জানান, তারা আজ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। দাবি না মানলে সোমবার সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, শিশুমেলার সামনে মিরপুর সড়কে অবস্থান নেওয়ায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে, পথচারীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
আহতরা জানান, চিকিৎসা না পাওয়ায় তারা গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও পঙ্গু হাসপাতালে বিক্ষোভ করেছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ চলে।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কবির হোসেন ছিলেন, যিনি আন্দোলনের সময় চোখে গুলিবিদ্ধ হন। তার বাড়ি মিরপুর-১১-তে। তিনি বলেন, “চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাসায় গেলে অসুখ বেড়ে যায়। হাসপাতালে এলে শুধু ড্রপ ও ব্যথার ওষুধ দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সুচিকিৎসা দরকার।”
বিক্ষোভকারীদের অনেকের চোখে গুরুতর আঘাত রয়েছে, কেউ কেউ এক চোখে, আবার কেউ দুই চোখেই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।
আজ রাস্তার মাঝে চাদর বিছিয়ে কেউ শুয়ে, কেউ বেঞ্চ পেতে বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
আহতদের অভিযোগ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সহায়তা পাওয়ার প্রক্রিয়া ধীরগতির, যা নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ।
আন্দোলনকারী মো. দুলাল, যার হাতে আঘাত লেগেছিল, বলেন, “তিন মাস আগে সরকার সুচিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ভালো চিকিৎসা পাইনি।”
বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকারের কেউ এখন আর তাদের খোঁজ নেয় না। তারা আন্দোলনে অবদান রেখেছেন, তাই সুচিকিৎসার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করতে হবে।