ইলিশের প্রজনন রক্ষায় চাঁদপুরের মতলবের ষাটনল থেকে হাইমচরের শেষ সীমানা পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার মেঘনা-পদ্মায় অভয়াশ্রমে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরা,পরিবহন,বেচা-কেনা ও মওজুত করার ওপর ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শুক্রবার।
শুক্রবার দিবাগত ১২টার পর চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার জেলেরা তাদের মাছ ধরার জাল ও ট্রলার নদীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও চাঁদপুরের মতলব শাটনোল থেকে হাইমচর পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার অপরাধে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ মা ইলিশ ও মাছ ধরার জাল, ট্রলার জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে মৎস্য বিভাগ, উপজেলা ও জেলা প্রশাসন,পুলিশ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন।
স্থানীয় জেলেরা বলেন, মা ইলিশসহ মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন,প্রায় ৫০ হাজার জেলে বেকার ছিলেন এবং তাদের প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ করা হয়েছিল,যা তাদের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
জেলা মৎস্য অফিসের কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা তৌকির আহমেদ জানান,১৭৮টি মামলায় নিষেধাজ্ঞার সময়কালে প্রায় ২১২ জন জেলেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও, ৪১ হাজার ৮৫৫ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন চাঁদপুর নৌ পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তিনি আরও জানান, ইলিশ ধরা,বিক্রি,হোর্ডিং ও পরিবহনের ওপর ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা গত ৭ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে,যাতে এর উৎপাদন বাড়ানো যায়।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে বরিশাল,চাঁদপুর,লক্ষ্মীপুর, ভোলা,শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী- এই ছয় জেলার ইলিশ অভয়ারণ্য।
ইলিশ,বাংলাদেশের জাতীয় মাছ,সামুদ্রিক মাছ বাংলাদেশের নদীগুলোতে যায় ডিম পাড়ার জন্য।
চাঁদপুরকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়,কারণ পদ্মা নদীর মাছ অন্যান্য নদী থেকে আসা মাছগুলোর চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয়।মাছটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উভয় দেশেই বেশ জনপ্রিয়। বিশ্বের প্রায় ৭৫ শতাংশ ইলিশ বাংলাদেশে জাল করা হয়।