জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে তিনি লন্ডন যাবেন এবং পরবর্তীতে নিউইয়র্কে অধিবেশনে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে।
ফ্লাইটটির স্থানীয় সময় বিকাল পৌনে ৫টায় লন্ডন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।
শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগ দেয়ার পরপরই নিউইয়র্কের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন। এরপর আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন তিনি।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড, যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়কমন্ত্রী লর্ড আহমেদ অব উইম্বলডন, লেবার পার্টির বিরোধী দলীয় নেতা স্যার কেয়ার স্টারমারও আলাদাভাবে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এছাড়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাকিংহাম প্যালেসে যুক্তরাজ্যের রাজা কর্তৃক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের উদ্দেশে লন্ডন ছেড়ে যাবেন এবং একই দিনে তার ফ্লাইট জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনা ২০ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএ বিতর্ক উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন এবং ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে (স্থানীয় সময় সাড়ে ৪টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টার মধ্যে) ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
নিউইয়র্কে থাকাকালীন তিনি ২০ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং বেশ কয়েকজন নেতার সাথে আলোচনা করবেন।
২০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা, ৭৭তম ইউএনজিএ বিতর্কের উদ্বোধনী অধিবেশন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত সংবর্ধনা এবং ‘ইউএনজিএ প্ল্যাটফর্ম অব উইমেন লিডার্স’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
একই দিনে তিনি স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বোরুত পাহোর এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন।
২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী টেকসই আবাসন সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন (বাংলাদেশ, বতসোয়ানা, স্লোভাক প্রজাতন্ত্র এবং ইউএন হ্যাবিট্যাট এর সহ আয়োজক) এবং গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ (জিসিআরজি) চ্যাম্পিয়নস মিটিংয়ে অংশ নেবেন এবং ইউএনএইচকিউতে পদ্মা সেতুর ওপর একটি স্থিরচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন।
একই দিনে তিনি কসোভোর প্রেসিডেন্ট ড. ভজোসা ওসমানি-সাদ্রিউ এবং ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো মেন্ডোজার সঙ্গে পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
এছাড়া ২১ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার সঙ্গে ডব্লিউইএফ এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক শোয়াব ক্লাউস এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা আলাদাভাবে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর), রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চস্তরের অনুষ্ঠান এবং যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ যৌথ ব্যবসায়িক কাউন্সিলের সাথে একটি উচ্চ পর্যায়ের নীতিগত গোলটেবিল বিষয়ে প্রাতঃরাশ বৈঠকে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। একই দিনে আইওএম মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিটোরিনো এবং আইসিসির প্রসিকিউটর নিক ক্লেগ ও করিম খানের সাথে দুটি পৃথক বৈঠক করবেন।
২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম সাধারণ বিতর্কে ভাষণ দেবেন।
এছাড়া তিনি ২৪ সেপ্টেম্বর প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
এরপর তিনি ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন এবং সেখানে ২ অক্টোবর পর্যন্ত থাকবেন।
ওয়াশিংটন থেকে যাওয়ার পথে লন্ডনে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির পর ৪ অক্টোবর ভোরে দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।