দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে কমিশনের অনুষ্ঠিতব্য সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
১৭তম কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভায় অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর তারা ঘোষণা দেয় আগামী নির্বাচনে ইভিএমে ভোট করতে চায়। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের জুনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপে ইভিএম প্রসঙ্গ উঠে আসে। সংলাপে দেশের নিবন্ধিত ৩৯টি দলকে আমন্ত্রণ জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি ১১টি। যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ যেসব দল ইভিএমে আগামী নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন তাদের চেয়ে বেশি বিপক্ষে বলেছেন। কেউ আবার জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনে প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন।
নির্বাচনের জন্য নতুন করে ইভিএম কেনার জন্য সরকারের কাছে প্রথমে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ চেয়ে পায়নি নির্বাচন কমিশন। পরে ইসির হাতে থাকা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) প্রয়োজনীয় মেশিন মেরামতে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী এক হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাইলেও অসম্মতি জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সচিবকে চিঠি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের অবস্থান জানায় অর্থ বিভাগ। ওই টাকা দিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম আগামী নির্বাচনের জন্য মেরামত করতে চেয়েছিল ইসি। তবে ইসির এমন চাহিদার বিপরীতে ৫০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয় অর্থ মন্ত্রণালয়। যে কারণে পরিকল্পনা ছিল স্বল্প পরিসরে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ১৭তম কমিশন সভায় পুরো ভোটেই ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন।
ভোটে ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ইভিএম কেনা ও মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়ায়, রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্যমত না থাকায় কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাহাংগীর আলম জানান, আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে স্বচ্ছ ব্যালট পেপারে ভোট হবে।