জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অব্যাহতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ মার্চ ) সকাল নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অবরোধ চলাকালে নতুন প্রশাসনিক ভবনে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও আসেননি।
তাদের দাবিগুলো হলো, ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা; নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।
আন্দোলনকারীরা জানান, সিন্ডিকেট সভায় ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের স্থায়ী শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে অব্যাহতি এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে অবহেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন উপাচার্য। তার প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষা করছিলেন তারা। কিন্তু উপাচার্য সভা শেষে তাদের সাথে কথা না বলেই তড়িঘড়ি করে প্রশাসনিক ভবনের পেছনের ফটক দিয়ে বের হয়ে যান।
অবরোধ চলাকালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেট যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেনি। উপরন্তু তারা বলেছেন, প্রক্টর এবং প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণস্বরূপ কোনো কিছু পাননি। এটা হতেই পারে না। কারণ, আমরা তথ্যপ্রমাণ দিয়েছি, উপস্থাপন করেছি। কিন্তু তারা যেহেতু বলেছেন তথ্যপ্রমাণ পাননি, এটা দুরভিসন্ধিমূলক।’
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী বলেন, ‘উপাচার্য সময় চেয়েছিলেন। তিনি পূর্বে কথা না রাখলেও আমরা সময় দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্ন হয় এমন কোনো কর্মসূচি দেয়নি। তবে উপাচার্য আবারো কথা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। তথ্য-প্রমাণ থাকার পরেও সিন্ডিকেটে প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তাই উপাচার্যের ওপর আস্থা রাখতে পারছি না।’