জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, টাকার সংস্থান করতে হবে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে।আমরা দ্রব্যের দাম বেশি নিয়ে কথা বলছি।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় জাপার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের তিনি এমনটা জানান৷
জিএম কাদের বলেন, দেশের যে ভয়াবহ অবস্থা তাতে করে সরকারকে এখনই এগিয়ে আসতে হবে। তা নাহলে মূল্যস্ফীতি যেভাবে হচ্ছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তাদের দুবেলা খাবার জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মতো বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে।
জাতীয় পার্টিতে ভাঙনের সুর দেখা যাচ্ছে– বলে জাপার সাবেক মহাসচিব রাঙার এমনই এক বক্তব্য নিয়ে জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি বিভক্ত হয়নি বরং দলের নাম ব্যবহার করে কিছু মানুষ বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তাদের কথার কোন গুরুত্ব নেই আমাদের কাছে। এককভাবে আমাদের যে রাজনৈতিক শক্তি ও অবস্থান আছে, সেটিকে আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমাদের একটা অতীত আছে।
তিনি বলেন, অতীতে যেরকম সুশাসন আমরা দিয়েছিলাম, পরবর্তীতে কোনো সরকার সেরকম দিতে পারিনি। আমরা এখন সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকার নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হচ্ছি। আমরা এভাবে নিজেকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। নির্বাচনের আগে অবস্থা ও পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেব।
জাপা চেয়ারম্যান দাবি করেন ইভিএমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তার ভাষ্যমতে, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি ইভিএমে কারচুপি হতে পারে। ইভিএমের মাধ্যমে সরকারি দল প্রভাব বিস্তার করে রেজাল্ট ছিনতাই করতে পারে। সাধারণ নির্বাচনে সরকারি দল এখন প্রতিনিধিত্ব করছে, সরকারি দলের অধীনে সব কিছু থাকায় তারা ক্ষমতা দেখিয়ে থাকে।
ভোটের রেজাল্ট নিজের পক্ষে নিয়ে যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, এসব কথা আমরা সবসময় বলে আসছি। এর আগেও আমরা যে কথাগুলো বলেছিলাম, সেগুলো সত্য প্রমাণ হয়েছে। ইভিএমে সুষ্ঠু ভোট হয় না, এবার নতুন নির্বাচন কমিশনার নিজেই বলেছেন। গাইবান্ধা উপনির্বাচনে সেটা প্রমাণ হয়েছে।
দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তিনি বলেন, জনগণ যেন জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, সে মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সাধারণ মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেশন কার্ডের মাধ্যমে বা অন্য কোনোভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী সরকার দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগেও বলেছেন খাদ্য সংকটের মাধ্যমে দেশে দুর্ভিক্ষ হতে পারে। এটা মোকাবিলায় সরকারকে এখন থেকে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।
তিনি জানান, মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান ছাড়াও ন্যায্যমূল্যে জনগণকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পৌঁছে দেওয়াটার দাবি আমরা করছি। আমরা আগেই অর্থ সংকটসহ দুর্ভিক্ষ হবার মতো পরিস্থিতির আভাস পেয়েছি।অর্থনৈতিক প্রভাব যেভাবে সাধারণ মানুষের ওপর পড়ছে, তাতে ব্যয় বেড়েই চলছে।
‘এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। আর দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে’, যোগ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।