প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খেলাধুলায় উৎকর্ষতা লাভের জন্য প্রশিক্ষণের সময় মানসিক শক্তি ও আত্মবিশ্বাস অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মানসিক শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যত বেশি প্রশিক্ষণ দেবেন, তত বেশি শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবেন।’
সেপ্টেম্বরে ২০২২ সালের সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বুধবার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ট্রফি বাংলাদেশে আনার জন্য নারী ফুটবলারদের হাতে পুরস্কারের অর্থ এবং আর্থিক সম্মানী তুলে দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডুতে চারবারের ফাইনালিস্ট ও স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২ জিতে নেয় বাংলাদেশ নারী দল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ক্রীড়াবিদদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে জাতি হিসেবে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে কষ্টার্জিত বিজয় অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিজয়ী জাতি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এটা অবশ্যই মনে রাখবেন। আমরা যুদ্ধে জয়লাভ করেছি এবং খেলাধুলায়ও জয়লাভ করব। আপনাদের এই মনোভাব থাকতে হবে। তবেই সফলতা আসবে।’
গত ১৪ বছরে খেলাধুলার উন্নয়ন বিষয়ে শেখ হাসিন বলেন, ‘আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে ক্রীড়া খাতের উন্নয়নের চেষ্টা করছি। প্রতিটি জেলায় একটি করে স্টেডিয়াম আছে এবং সেই স্টেডিয়ামটি প্রতিটি খেলার জন্য ব্যবহার করা হবে।’
প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই স্টেডিয়ামগুলো সব ধরনের খেলাধুলার জন্য ব্যবহার করা হবে এবং স্কুলপর্যায়ে তাদের বার্ষিক ক্রীড়া ইভেন্টগুলোর জন্য ব্যবহার করতে পারে৷’
তিনি আরও বলেন, ‘তার সরকার বেশ কয়েকটি উপজেলায় ১২৫টি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছে এবং দ্বিতীয় ধাপে এরকম আরও ১৮৬টি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১৭৩টি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে দেশের ক্রীড়া খাতের উন্নয়নে সরকার প্রতিটি জেলায় ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ করবে এবং প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপি থাকবে।
তিনি বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও সাহিত্য শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য ব্রাজিল, পর্তুগাল, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে খেলোয়াড়দের পাঠিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে সরকার ‘সবার জন্য ক্রীড়া’ নীতির অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার বাচ্চারা ফ্ল্যাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে, খেলাধুলায় যায়ই না।’
তিনি অভিভাবকদের এ বিষয়ে তাদের সন্তানদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে এবং নিয়মিত খেলার মাঠে নিয়ে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকতে হবে।’
তিনি সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসতে বলেন এবং স্থানীয় ক্রীড়া উন্নয়নে অবদান রাখতে বলেন। তিনি বলেন, ‘তারা অন্তত তাদের সংস্থায় ক্রীড়াবিদ নিয়োগ করতে পারে যাতে তাদের জীবিকা নিশ্চিত হয়।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সাবিনা খাতুন এবং যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।