তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো আগ্রহ নেই বলেও জানিয়েছেন ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাসে ঢাকায় সফররত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা জানান। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আবেদ আলী বলেন, এ বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তারা একটি প্রশ্নও করেননি। সংবিধানে নেই এমন কোনো কথা বলেননি তারা। তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ে কোনো কিছু তারা জানতে চাননি।
ইভিএম নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়েছে। তারা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কেন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিরোধিতা করছেন। তারা কেন ইভিএম চাচ্ছে না। যেহেতু আমাদের সঙ্গে ইভিএম বিশেষজ্ঞ ছিলেন। যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনিও ইভিএম বিষয়ে ভালো জানেন। তিনি বলেছেন, ইভিএম-তো একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। সেটা থেকে কেন আপনারা সরে এলেন? তখন আমি বলি, রাজনৈতিক দলগুলোর এ নিয়ে আপত্তি ছিল। তখন তিনি বলেন, এটা তো হতে পারে না। আমরা অবাক হয়েছি।
তারা পর্যবেক্ষক পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে কি না, জানতে চাইলে ইএমএফ চেয়ারম্যান বলেন, তারা আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের মাধ্যমে আসার কোনো সুযোগ আছে কি না তা তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি, অবশ্যই আশা যাবে। কারণ আমরা বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়ে আসি। আপনারা আমাদের মাধ্যমে আসতে পারবেন। এ কথাটা সুনির্দিষ্টভাবে তারা উল্লেখ করেছেন। আমরা আশা রাখছি, তারা আসবেন।
ইএমএফ চেয়ারম্যান বলেন, দেশে সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কতটা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে, সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল কি না, সেটাও তারা জানতে চেয়েছেন। জবাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে বাস্তব যে চিত্র দেখেছি, সেটি আমরা তাদের সামনে তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশন ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট আন্তরিক ছিল। ভোট যাতে নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়, এ ক্ষেত্রে তারা যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছিল। সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।’
এবিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা এ বিষয়ে কিছু বলেননি। কেবল নোট নিয়েছেন। তারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আমাদের মনে হয়েছে, তারা আমাদের আলোচনায় ও সার্বিক যে তথ্যগুলো আমরা দিয়েছি, তাতে সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, আমরা তাদের সামনে সবগুলো নির্বাচনের বাস্তবিক চিত্র তুলে ধরেছি। তারা এ বিষয়ে আগে থেকেই অবগত আছেন। তাদের মধ্যে একজন প্রতিনিধিও আছেন, যিনি এর আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন।
এসময় ফোরামের উপদেষ্টা ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান ও বুয়েটের উপ-উপাচার্য ড. আব্দুল জব্বার খান উপস্থিত ছিলেন।