বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর ২০২২ সালে নেয়া মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২শ’ কোটি ডলার। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে চলতি বছর এই দেশগুলোর ঋণ নেয়ার হার ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।
উল্লেখিত ঋণের দুই তৃতীয়াংশই চীন যোগান দিয়েছে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আয়োজিত এক সেমিনারে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মালপাস বলেন, ‘এই অর্থের পরিমাণ বিশাল; এই পরিমাণ অর্থের সুদের হারও অনেক বেশি। যে সব দেশ ঋণ নিয়েছে তাদের বেশিরভাগেরই ঋণের কিস্তি পরিশোধের মতো সামর্থ্য নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি দুশ্চিন্তা বোধ করছি এ কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারা জনিত কারণে সামনের দিনগুলোতে অনেক দরিদ্র দেশ ঋণখেলাপি হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংকট শুরু হবে।’
ডেভিড বলেন, ‘আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, দরিদ্র দেশগুলোতে যদি ঋণ ও অর্থ সহায়তা দেয়া বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে সে সব দেশে মানবিক বিপর্যয় ও নেমে আসবে।’
এই আসন্ন সংকট মোকবেলায় তার নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল চীনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে জানান ম্যালপাস। আগামী সপ্তাহে এই বৈঠক হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে সেমিনারে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফলে সামনে যে বৈশ্বিক সংকট আসছে, তা থেকে রেহাই পেতে চীনকে যুক্ত করা খুবই দরকার বলে আমরা মনে করি। শুরু থেকেই বিশ্বব্যাংক বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করছে। এবার আমরা চীনের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে চাই।’
নিউইয়র্ক সিটির ওই সেমিনারে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শীর্ষ নির্বাহী ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা চীনের বৃহত্তম দুই বাণিজ্যিক ব্যাংক ‘চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ এবং ‘এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়না’র কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
চীনের এই দুই ব্যাংক বিশ্বের বড় ঋণদাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশের পক্ষে অধিকাংশ বৈদেশিক ঋণ এই দু’টি ব্যাংক থেকেই আসে।