বুধবার, জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
Homeসারাদেশ'দাদাভাই আমগো পেটে ভাত নাই, আগের মতো আর কাজ নাই'

‘দাদাভাই আমগো পেটে ভাত নাই, আগের মতো আর কাজ নাই’

মো.তারেক রহমান, রাজশাহী প্রতিনিধি:
কোরবানির ঈদের জন্য দীর্ঘ ১১ মাস জুড়েই  অপেক্ষা চলে কামারপট্টিতে। সারা বছর ঘুরে এই সময়ে ব্যস্ততা থাকে চোখে পড়ার মতই।মুসলমানদের ঈদ আনন্দের সরঞ্জাম জোগাড়ে বেঁচাবিক্রির ফলে আনন্দও বয়ে যায় এই শিল্পীদের মাঝেও। তবে এবারের চিত্র কিছুটা ভিন্ন হয়েছে বলেই হতাশ হতে হচ্ছে রাজশাহীর পবার এই শিল্পীদের।

পবার কামারপট্টিতে এবার নেই আগের মতো কাজের চাপ। দেখা যাচ্ছে না ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদের বাকি মাত্র ২/৩ দিন, এখনও খুব একটা চাপ সামাল দিতে হচ্ছে না তাদের। তাই অনেকটা হতাশা নিয়েই তাদের সারা বছরের অপেক্ষা ফুরাচ্ছে। পবার হরিয়ান ইউনিয়নের রনহাট কামারপট্টি ঘুরে এমনই হতাশার সুর উঠে এসেছে তাদের কথায়।

রনহাট কামারপাড়ায় ছুরি, বঁটি সংগ্রহে  আসা ক্রেতাদের দাবি, আগের তুলনায় দাম অনেকটাই বাড়তি। কামাররা বলছেন, ছুরি ,চাকু, চাপাতি,বঁটি দা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায়  এসব পণ্যের দামও বেড়েছে। আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে কয়লার দাম আবার লোহার বেড়েছে দাম।

কথা হয় প্রবীন এক কামারের সাথে নাম তার সুদেব কর্মকর, কথা বলার সময় নিচু মাথায় মন অনেকটা খারাপ করেই বলছিলেন, দাদাভাই আমগো পেটে ভাত নাই, আগের মতো আর কাজ নাই, আমগো পল্লীতে লোকজনের সমাগম একেবারেই নাই। তাই বেচা-বিক্রিও খুবই কম।

একটু পাশেই আরেক দোকানি বাসুদেব কর্মকার বলেন, সবকিছুরই দাম বেড়েছে। দা,ছুরি বানাতে যে লোহা,কয়লা লাগে- তার দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। ফলে আমাদেরও দা,ছুরি বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, আগে যে ছুরি ১০০ টাকায় বেচতাম, তা এখন ১৫০ টাকা বড় গুলা ২৫০ টাকা । ৪০০ টাকার চাপাতি এখন দাম বেড়ে ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা হয়েছে । ফলে অনেক ক্রেতা এসে ফিরে যাচ্ছে। তারপরও বেচাকেনা গত কয়দিনের তুলনায় এখন মোটামুটি হচ্ছে। তবে কোরবানির ঈদে যতটা আশা করেছিলাম, সেরকম হচ্ছে না।

পবার কাটাখালী এলাকা থেকে কোরবানির পশুর হাড় কাটার জন্য চাপাতি কিনতে  এসেছেন ভ্যান চালক আবদুল আজিজ।  তিনি জানান, ‘চাপাতি কিনতে আসছিলাম। এখানে আসার পরে সিদ্ধান্ত নিলাম বানিয়ে নিয়ে যাবো, পণ্যটা মজবুত পাওয়া যাবে’  দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুল আজিজ বলেন, ‘সবকিছুরই দাম বাড়তি। ছুরি-কাঁচির দাম বাড়বো এটাই স্বাভাবিক। তাই বাড়তি দামেই কিনতে হবে।’

spot_img

সর্বশেষ

আরও সংবাদ