কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো.সারওয়ার হোসেন অভিযোগ তুলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মো.শরীফ উদ্দিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে হয়রানিমূলক মামলা করেছেন। একই অভিযোগ এনেছেন কেজিডিসিএলের সার্ভেয়ার দিদারুল আলম ও আরএফ বিল্ডার্সের মালিক দেলোয়ার হোসেন।
বুধবার(১৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এ বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শরীফের বিরুদ্ধে তারা এই অভিযোগ তোলেন। তারা শরীফের করা দুর্নীতির মামলার আসামি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক জিএম সারওয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, অবৈধ সুবিধা নিতে না পেরে দুদকের তৎকালীন কর্মকর্তা শরীফ তাদের (সারওয়ার, দিদারুল ও দেলোয়ার) বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। ব্যক্তিগত হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে শরীফ তার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করেছেন। নিয়ম মেনে তিনি নগরের হালিশহর থেকে চান্দগাঁওয়ে ১২টি গ্যাসের চুলার সংযোগ স্থানান্তর করেছেন কিন্তু শরীফের শাশুড়ির আকবর শাহ এলাকার গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সারওয়ার বলেন, শরীফ তার ভাই শিহাব উদ্দিনকে কেডিসিএলে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে অস্থায়ী নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। শিহাবের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সনদও ছিল ভুয়া। শিহাবের চাকরি স্থায়ী করার জন্য কেডিসিএলের কর্মকর্তাদের চাপ দিতেন শরীফ। এছাড়া তিনি তার এক খালাতো ভাইকে কেজিডিসিএলে গাড়িচালক হিসেবে নিয়োগ দেন।
সংবাদ সম্মেলনে দেলোয়ার বলেন, তিনি বৈধ পথে আয় করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। তারপরও স্ত্রীসহ তাকে আসামি করে মামলা করেছেন শরীফ। নগরের ২ নম্বর গেট এলাকার দুটি দোকান তার কাছে চেয়েছিলেন শরীফ। তা না দেওয়ায় শরীফ মামলা করেছেন।
সারওয়ার, দিদারুল ও দেলোয়ারের অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক দুদক কর্মকর্তা শরীফ বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেননি বলেই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন এবং আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এখন তারা জামিনে রয়েছেন আর মামলা তদন্ত করছে দুদক।
সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে শরীফ জানান, হালিশহরের নুর জাহান নামের এক নারীর সই জাল করে তার ১২টি চুলা চান্দগাঁওয়ে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ছেলের নামে স্থানান্তর করেছিলেন সারোয়ার। নিয়ম অনুযায়ী, এক ব্যক্তি তার নামে থাকা চুলা অন্যখানে নিজ ব্যবহারের জন্য স্থানান্তর করতে পারবেন। কিন্তু তা অন্য ব্যক্তিকে হস্তান্তরের কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, এ কারণে গত বছরের জুনে সারোয়ার, কেজিডিসিএলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, ট্রান্সমিশন বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. মজিবুর রহমান, সার্ভেয়ার মো. দিদারুল আলম ও ১২ চুলার গ্রাহক মুজিবুর রহমানকে আসামি করে মামলা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা মেলার পর দুদক অনুমোদন সাপেক্ষেই আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এখানে ব্যক্তিগত আক্রোশের কিছু নেই, যোগ করেন দুদকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন।