বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে যদি পরিবর্তন আনতে হয় তবে সেটা তরুণদের ছাড়া সম্ভব নয়। আজকে লড়াই, সংগ্রাম, যুদ্ধ সবই করতে হবে তরুণদের। বিএনপির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে তরুণদের উপস্থিতি কম, বিষয়টি ভাবতে হবে। কারণ তরুণদের ছাড়া পরিবর্তন সম্ভব নয়।
বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত নাগরিকদের সাংবিধানিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যখন দেখি নারী লাঞ্ছিত হচ্ছে, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রী লাঞ্ছিত হচ্ছে, তখন ছাত্ররা রাজপথে নামে না, তরুণরা প্রতিবাদী হয় না, তখন কষ্ট পাই। অথচ পাকিস্তান শাসনামলে সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে এই ছাত্ররা, তরুণরা। দুর্ভাগ্য আজকে সে তরুণ ও ছাত্রদের দেখতে পাচ্ছি না।
এক শিক্ষার্থীর মন্তব্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েক দিন আগে এক স্কুলছাত্রের কাছে জানতে চাইলাম- তুমি বড় হয়ে কী হবে? সে বলল রাজনীতিবিদ হতে চাই। উত্তর শুনে অবাক হয়ে বললাম- কেন? বাচ্চাটি বলল রাজনীতিবিদ হলে অনেক টাকার মালিক হওয়া যায়। আসলে সেই বাচ্চাটির কোনো দোষ নেই। সে দেখেছে ক্ষমতাসীনরা কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আর পরিবর্তন আসবে তরুণদের মাধ্যমে।
সরকারের সব কর্মকাণ্ডই দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কোন সংবিধানের কথা বলে আওয়ামী লীগ, এটা তো আওয়ামী লীগের তৈরি করা সংবিধান, যে সংবিধানে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। আওয়ামী লীগের একটি সমস্যা, তারা মনে করে এ দেশের মালিক আওয়ামী লীগই। এর ভেতর থেকে বের হয়ে আসতে হলে বড় একটা ঝাঁকুনি দরকার, সংগ্রাম, যুদ্ধ দরকার। বড় সুনামি ছাড়া আমাদের ঘাড়ে যে পাথর চেপে বসে আছে তা সরানো যাবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে।স্বাধীনতাযুদ্ধের সব স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ থেকে মুক্তি পেতে গণতন্ত্রকামী সব দল এক হয়েছে। এখন সব মানুষকে এক করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
ফখরুল বলেন, আজকে এমন কিছু নেই যেখানে আওয়ামী লীগ হাত দেয়নি। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ, ব্যাংক খালি, লুটপাট করে জাতিকে পুরোপুরিভাবে দুর্নীতিপরায়ণ জাতি হিসেবে পরিণত করছে।
আলোচনাসভায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
এ ছাড়াও জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফাতিমা তাসনিম, আবু হানিফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুমসহ অনেকেই।