মো. খোকন, নেত্রকোণা প্রতিনিধি: দেশের ভূমি অফিসগুলোর দুর্নীতির গল্প প্রতিনিয়ত পত্রিকার শিরোনাম হয়ে আসছে। এইসব অফিস থেকে টাকা ছাড়া কাজ আদায় এই সময়ের প্রেক্ষাপটে যেন অবাস্তব কল্পনা। তেমনই এক অবাস্তবতার প্রেক্ষাপটে ঘটেছে নেত্রকোণায় সাহতা ইউনিয়নে৷
নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার সাহতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারীর কাজ করেন ওয়াজেদ মিয়া। তিনি প্রতিনিয়তই সেবার বিনিময়ে গুণে নেন হাতখরচের টাকা–ঘুষ; আবার পাশাপাশি শুনিয়ে দেন নানা রকমের নীতিকথা। উনার কর্মকাণ্ড প্রশাসনের চোখেও দেখা যায় ফাঁকি। সাংবাদিকদেরও বারবার তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েই চলেছেন। তবে এবার ঘুস গ্রহণের সময় ধরা পড়েছেন হাতেনাতে।
এক অফিসে শুধু একাই নন আরও আছেন রাঘব-গোয়াল।
নেত্রকোণা জেলার সাহতা ইউনিয়ন ভূমি অফিস কর্মকর্তা ( নায়েব) থেকে শুরু করে অফিস সহকারী ওয়াজেদ মিয়ার কাছেও পরামর্শের জন্য দিতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। এ পদ্ধতি ছাড়া সাধারণ পথে মিলছে না কোন সেবা। টাকা না দিলে ভুক্তভোগীদের হতে হয় নানা হয়রানির শিকার। এমনটাই ভাষ্য স্থানীয়দের।
অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সাহতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান ‘ফেস দ্যা পিপল’ নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি মো. খোকন। অফিসের কর্মকাণ্ড পর্যাবেক্ষণের পর মিলে স্থানীয়দের বলা অভিযোগের সত্যতা। ঘটনা সত্যতা ও প্রমাণ স্বরূপ ভিডিও, স্থিরচিত্র তুলে রাখেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী একজন বলেন, ‘ঘুষের টাকার দরকষাকষির জন্য বাহিরেও তাদের নিজস্ব লোকজন রাখা আছে। তাদের কথায় মিটমাট হলে তারপরই কাজ করা হয়৷ নইলে হবে না বলে ফেরত পাঠান। এক কাজের জন্য বারবার গিয়েও লাভ হয়না।’
এ নিয়ে সাহতা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা’র (নায়েব) কাছে জানতে গেলে তিনি ক্যামেরা দেখে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তী তারই এক প্রতিনিধি পাঠিয়ে গণমাধ্যম কর্মীকে এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ না করতে টাকা (ঘুষ)দিতে চান।
এমন ঘটনায় আরেক ভুক্তভোগী রহমান খান (ছদ্মনাম) বলেন, ‘এক শতাংশ জমি খারিজ করতে তার নিকট ১৮হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি সম্পূর্ণ টাকা দিতে না পারায় তার জমি খারিজ করা হচ্ছে না।’
ঘটনার ব্যাপারে কিছু জানেন না উল্লেখ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আক্তার ববি’র সঙ্গে কথা বললে তিনি ফেস দ্যা পিপলকে বলেন, ‘বিষয়টা লিখিত আকারে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টা আমি খতিয়ে দেখব।’