বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। এই দেশে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। পরিষ্কার কথা। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনোকালেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আগামীতেও হবে না।
তিনি বলেন, সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে আবার নির্বাচনের কথা বলে। এরা আবারও যেনতেন ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। নির্বাচন এখন সরকারের খেলায় পরিণত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২৩ জুন) জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক পদযাত্রা কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতির প্রতিবাদ ও ১০ দফা দাবিতে এ পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। রাজধানীর বাড্ডা সুবাস্তু নগর ভ্যালি থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রাটি মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় গিয়ে শেষ হয়। এ পদযাত্রায় বিএনপি, শ্রমিকদলসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে সরকার, তারা ব্যাংক লুট করে নিয়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও স্বাস্থ্যখাত সবই আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। প্রতিবাদ করলে হামলা-মামলা এমনকি গুম হয়ে যেতে হয়। পুলিশের কাছে ন্যায়বিচার নিয়ে মামলা করতে গেলে উলটো মামলায় জড়ানো হয়। সব জায়গায় অনিয়ম।
বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক সমর্থন হারিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এমন এমন কথা বলছেন যা দেশকে বিপদে ফেলছে। তিনি বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাকে সরাতে চায়। কিন্তু এ ধরনের কথা একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেউ আশা করেনি। তিনি বুঝে গেছেন, আন্তর্জাতিক মহল তাকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আন্তর্জাতিক সমর্থন হারিয়েছে বর্তমান সরকার, দেশের মানুষেরও সমর্থন নেই তাদের। দেশি-বিদেশি সবাই বলছে সরকারকে এখনই চলে যেতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। এই দেশে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। পরিষ্কার কথা। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনোকালেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আগামীতেও হবে না।
বিএনপির আন্দোলনকে সরকার ভয় পায় বলেই বিএনপি নেতাকর্মীদের আটকে রাখা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারকে সরাতে হবে। নির্বাচনে বিএনপিকে বাইরে রাখতে সরকার আবারও নীল নকশা করছে। আমাদের পরিষ্কার কথা, বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে তবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে। আর বিএনপি ছাড়া এদেশে আর কোনো ভোট হবে না, হতে দেওয়া হবে না।
শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম রাজার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভুঁইয়া প্রমুখ।