পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের এক পুলিশ দপ্তরে দুটি বিস্ফোরণে অন্তত ১২ পুলিশ সদস্য নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৪ এপ্রিল) রাতে সেখানকার সোয়াত উপত্যকার কাবাল পুলিশ দপ্তরে এই ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। এ বিস্ফোরণ আত্মঘাতী বোমা হামলা নাকি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে রাখা কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য থেকে ঘটেছে, তা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে।
যেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে সেখানে কাবাল পুলিশের কয়েকটি ভবনের পাশাপাশি রিজার্ভ পুলিশের সদর দপ্তরও রয়েছে। তবে বিস্ফোরণের মূল ঘটনাটি ঘটে পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগের ভবনে।
সোয়াত জেলা পুলিশের কর্মকর্তা সফিউল্লাহ গন্ধপুর পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের কাছে এই বিস্ফোরণকে আত্মঘাতী বোমা হামলা বলে দাবি করেছেন।
তবে কাবালের পুলিশ কর্মকর্তা শরিফুল্লাহ খান আল-জাজিরাকে বলেন, তাঁর বিশ্বাস এটি কোনো বোমা হামলার ঘটনা নয়। বরং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ভবনের বেসমেন্টে রাখা কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য থেকে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে। পরে সেখানে আগুন ধরে যায়।
প্রাদেশিক পুলিশের প্রধান আখতার হায়াত বলেন, ওই ভবনের বেসমেন্টে পুরোনো কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য ছিল। সেখান থেকেও বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। আবার এটি কোনো সন্ত্রাসী হামলাও হতে পারে। তিনি জানান, নিহতদের অধিকাংশই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সদস্য। তবে এক নারী ও তাঁর শিশু সন্তানও প্রাণ হারিয়েছেন। ঘটনার সময় তাঁরা ওই ভবনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
দেশটির উদ্ধার তৎপরতা বিভাগ রেসকিউ ১১২২ এর মুখপাত্র আয়েশা খান হতাহতদের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
আহত পুলিশ কর্মকর্তাদের একজন ইমদাদ খান ডনকে বলেন, রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশ দপ্তরের অভ্যন্তরে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। যেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে সেখানে পুলিশের সন্ত্রাস দমন বিভাগের ভবন ও একটি মসজিদ রয়েছে।
ইমদাদ খান আরও বলেন, এ ঘটনায় তিনটি ভবন ধসে পড়েছে। এরপর সেখানে আগুন ধরে যায়। ঘটনার সময় কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে রান্না ঘরে ছিলেন জানিয়ে ইমদাদ বলেন, তিনি দুটো বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে সেখানকার সাইদু শরিফ টিচিং হাসপাতালে নেওয়া হয়। আশপাশের অন্যান্য হাসপাতালেও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পৃথকভাবে নিন্দা ও শোক জানিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ, খাইবার পাখতুনখাওয়ার তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ আজম খান প্রমুখ।