আজকে দেশে কোথাও গণতন্ত্র নেই। ১৫ দিনে ২৪ হাজার বিরোধী নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হলো। এটি একটি ফ্যাসিবাদী নমুনা বলে অভিযোগ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, অনেক আওয়ামী লীগার বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর কথা বলেন এবং বইটি বিলিও করেন। কিন্তু বইতে বঙ্গবন্ধুর যে আদর্শ লিপিবদ্ধ আছে তা কী আওয়ামী লীগের নেতারা বাস্তবায়ন করেন? তারই কন্যা আজ আইনকে নির্বোধ বানিয়ে অপব্যবহার করছেন।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে দুই শতাধিক নেতাকর্মী ডা.জাফরুল্লাহর কাছে ফুলের তোড়া দিয়ে ভাসানী অনুসারী পরিষদে যোগ দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হাজী সেলিমের ১০ বছর কারাদণ্ডাদেশ থাকলেও তাকে জামিন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বয়োজ্যেষ্ঠ খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। হাইকোর্টের বিচারপতিরাও আজ মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়েছেন। সবাই সম্মিলিতভাবে অগ্রসর হতে না পারলে এ বৈষম্য থেকে মুক্তি সম্ভব নয়।
সরকারের এক মন্ত্রী বললেন- কে সাধারণ সম্পাদক হবেন তা নির্ধারণ করবেন একজন এমনটা উল্লেখ করে ডা.জাফরুল্লাহ বলেন,বড় বড় দলে এই সমস্যা। নেতাকর্মীদের ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা যায় না। যদি তাই হতো তাহলে কর্মীদের প্রতি নেতাদের ভালবাসা ও কমিটমেন্ট ঠিক থাকতো।
বিএনপির ২৭ দফা নিয়ে তিনি বলেন, এখানে আরও কাজ করতে হবে। আমরা কথা বলতে পারি না, মিছিল করতে পারি না। করতে হলে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। পুলিশ অনুমতি দেওয়ার কে? মিছিল সমাবেশে বাধা দেয়া হবে না এটিও দফাতে উল্লেখ রাখতে হবে।
পুলিশের উদ্দেশে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন,যাদের জন্য দিনের ভোট রাতে করেছেন তারাই আপনাদের চাকরিচ্যুত করছেন। আপনারা সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করুন। গরিবের ওপর চাঁদাবাজি বন্ধ করুন। বড়লোকের টাকা খান।
তিনি বলেন,স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্রনীতিতে সরকার সবচেয়ে বেশি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মানুষ আজ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। যাদের অর্থ আছে তারাই চিকিৎসা করতে পারছেন। ওষুধের দাম আকাশচুম্বী, সেদিকে সরকারের নজর নেই। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে ডা.জাফরুল্লাহ বলেন, চা খাওয়ার আমন্ত্রণ করে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করছেন।ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলায় আজ দুই বছর যাবত মাওলানারা জেলখানায়। অথচ, খুনি-দুর্নীতিবাজ ও লুটেরারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ১৫ বছর এ সরকার জাতিকে শাসনের পরিবর্তে শোষণ করছে। দেশের টাকা বাইরে পাচার করছে। মানুষের কোনো অধিকার নেই। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী। মানুষ আওয়ামী লীগকে আর রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই দেশের সকল বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এক হচ্ছে। জনগণকে সাথে নিয়েই এবার আমরা দেশকে ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে রক্ষা করবো ইনশাআল্লাহ।
এ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান বিজু, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুর রহমান, আবু ইউসুফ সেলিম, বাবুল বিশ্বাস, জামিল আহমেদ, আরিফুর রহমান, হাবিবুর রহমান, রাজু আহমেদ প্রমুখ।