সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম নড়াইলসহ আরো বেশকিছু জেলার প্রায় সবখানেই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। যার ফলে সবকিছুর সঙ্গে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুদের পড়ালেখা। প্রতিটি পরিবার যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেমনি মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই পড়ালেখা থেকে দূরে থাকতে হয়েছে ভর্তিচ্ছুদের।
বন্যাকবলিত সিলেট বিভাগের দুর্দশা কে না দেখেছে? বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ অনেক ব্যক্তিবর্গ আর্থিক সহায়তা ও শ্রম দিয়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে কাজ করছেন। তারা প্রত্যক্ষভাবে অনুধাবন করেছেন কতটা সংকটে সময় পার করেছে প্রতিটা পরিবার এবং কতটা পড়ালেখা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল সে অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা।
ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি সিলেট বিভাগে বন্যার কারণে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা পেছানোর জন্য অনেকভাবে কথা উঠলেও সেটি কার্যকর হয়নি এখনো। বিশেষ করে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা- যেখানে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় একত্রে পরীক্ষা নেবে, সেখানে লাখো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। সে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থীরা যদি পরীক্ষার পূর্ব মুহূর্তে এমন একটি দুর্যোগপূর্ণ সময়ের মধ্যে নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে না পারে তাহলে কিভাবে তারা ভর্তি পরীক্ষায় নিজেদের প্রমাণ করবে?
দেশের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা পড়ার সুযোগ পেলেও সিলেট বিভাগসহ বন্যাকবলিত কয়েকটি অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন ছিল। তারাও স্বপ্ন দেখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার, তারাও স্বপ্ন দেখে নিজের জীবনকে উজ্জল করে দেশ ও জাতির জন্য নিজেকে তৈরি করার।
কিন্তু অনাকাঙ্খিত এই বন্যার কারণে পরীক্ষার পূর্ব মুহূর্তে প্রায় এক মাসের মত তারা পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত। যা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে।
তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ ইউজিসির প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ, দেশের এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটিয়ে অতি দ্রুত পরীক্ষা না নিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন পিছিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
লেখক: রাসেল মাহমুদ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়