ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগে এক দফা ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এবিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদ, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াহিদুর রহমান ও শহিদুল ইসলাম শাহেদ। এছাড়াও অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের করা অভিযোগগুলো ছিল-
১. তিনমাস অতিবাহিত হতে চললেও উপাচার্য এখনো শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেননি।
২.ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী বিতর্কিত বেরোবির সাবেক উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসানো, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে না সরানো।
৩. ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু হেনা মোস্তফা কামালের ট্রেজারার হিসেবে যোগদানে শিক্ষার্থীদের বাঁধা থাকলেও, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ট্রেজারার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বুধবার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টায় গোপন স্থানে নিয়ে সহকারী রেজিস্ট্রারকে (প্রশাসন) দিয়ে জোরপূর্বক অফিস আদেশ দিয়ে ট্রেজারারের ব্যক্তিগত ড্রাইভার ও দপ্তরের জনবল নিয়োগ দেওয়া।
৪. শেখ হাসিনা, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও বঙ্গবন্ধু হল এবং শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির নাম পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবি থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কোনো যোগ্য উত্তর না দেওয়া এবং পদক্ষেপ না নেওয়া।
৫. জুলাই-আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া।
৬. গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনের সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে পান না। দেখা করতে গেলে বেশিরভাগ সময় তিনি ব্যস্ত থাকেন নতুবা ঢাকায় অবস্থান করেন।
৭. ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর শিক্ষার্থীদের যে ২২ দফা ছিল; সেই ২২ দফা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার্থী কারোর সাথে আলোচনা না করা।
৮. জুলাই বিপ্লবের যে চেতনা তিনি আংশিকভাবেও ধারণ করেন না; তিনি তার কাজের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবের চেতনার বিরোধী।
এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা মনে করেন, শুচিতা শরমিন উপাচার্য পদে থাকার অযোগ্য। তাই তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপনীত হয়েছেন।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নিয়োগে পদক্রম অনুসরণ না করা; মেডিকেল সেন্টারে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রাখার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ ঔষধের মজুদ না থাকার বিষয়ে পদক্ষেপ; সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী মাইশা নিহতের পর শিক্ষার্থীদের দেওয়া ৮ দফার বাস্তবায়ন না করা; শহীদ আবু সাঈদের নামে করা স্মৃতিফলকের অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করাসহ অন্যান্য অভিযোগও করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, রোববার আমাদের সঙ্গে ভিসি আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। আমরা তার সম্মানার্থে বসবো। তিনি যা বলতে চাইছেন তা শুনবো। কিন্তু তাকে পদত্যাগ করার এক দফা দাবি অব্যাহত থাকবে। দাবী বাস্তবায়নে আমরা কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হবো।