তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যে সরকার ইতিপূর্বে দায়িত্ব পালন করছিল, তারাই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে, আমাদের দেশেও সংবিধান অনুযায়ী তাই হবে।’
আজ বুধবার (১০ মে) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের দেয়া অনুরূপ প্রস্তাবনা বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মন্তব্য করেছেন। এটি কারো জন্য কোনো প্রস্তাবনা নয়, সেটি করা হবে কি হবে না, সেটি বলার সময় এখনো আসেনি। বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করে বা তারা যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার দাবিতেই অনড় থাকে, তাহলে এ সমস্ত আলোচনার প্রশ্নই আসে না। ২০১৪ সালের প্রেক্ষাপট আর আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা সেটি গ্রহণ করেনি।’
বিএনপির বক্তব্য- তারা নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় এবং সরকার নির্বাচন নিয়ে পুরনো খেলা খেলছে, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা একটি উৎসবমুখর এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নির্বাচন করতে চাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে বলেছেন, আমরা যুক্তরাজ্যের মতো সুন্দর নির্বাচন করতে চাই। আর সেটি করতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সহায়তা প্রয়োজন। আমরা সেটি করতে চাই। আর অপর একটি রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচন প্রতিহত করতে চায়, তাহলে সেই সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভবপর হয় না।’
আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে কারো সাথে খেলা শুরু করিনি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি আশা করব, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভালো নির্বাচন করতে সহায়তা করবে। আর আমরা নির্বাচনের সময় খেলতে চাই এবং সেই খেলায় বিএনপিকে আহ্বান জানাব। আমরা উনাদের সাথে খেলে গোল দিতে চাই।’
পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেফতার এবং এ নিয়ে বিক্ষোভ ও অন্যান্য দেশে পাকিস্তানের নাগরিকদের চলাফেরায় সতর্কতা জারি বিষয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ। তবে ইমরান খানকে গ্রেফতার করার পর যেভাবে বিক্ষোভ হচ্ছে, সে বিক্ষোভ দেশ ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশেও হচ্ছে, এতেই প্রমাণিত হয় জনগণের একটি অংশের মধ্যে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। পাকিস্তানের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের সতর্ক করবে। এটিই স্বাভাবিক। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে গণতন্ত্র সবসময় হোঁচট খেয়েছে, খাচ্ছে এবং সবসময় সঙ্ঘাত লেগে আছে, এটিই দুঃখজনক।
সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের ‘পাকিস্তানই ভাল ছিল’ মন্তব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে পাকিস্তানের যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি, অনেকটা দাঙ্গা হচ্ছে বলা যেতে পারে, ওই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে মির্জা ফখরুল সাহেবের কাছে সাংবাদিকরা তার মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাইতে পারে।’