ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে বিএনপি। এসময় দলটির নেতারা রাষ্ট্রদূতদের বলেছেন, তাদের দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
রবিবার বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মতোই সব গণতান্ত্রিক দেশও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা ইইউ রাষ্ট্রদূতদের স্পষ্ট করে বলেছে যে তাদের দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
তিনি বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইনের শাসন, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে যেহেতু দেশ এবং এর বাইরেও পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে, স্বভাবতই বিষয়টিতে তাদের (ইইউর) দৃষ্টি রয়েছে। সেইদিক থেকে আমরা আজ (রবিবার) তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
গুলশানের এবিসি হাউসে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, জার্মানি, স্পেন, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন আমির খসরু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
আগামী নির্বাচন নিয়ে তারা কী আলোচনা করেছেন জানতে চাইলে খসরু জানান, ‘বেআইনি’ সরকার ক্ষমতায় থেকে দেশের জনগণের ভোটাধিকার ‘ছিনিয়ে’ নেয়ায় বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা কীভাবে ভেঙে পড়েছে তা নিয়ে তারা কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারলে বাংলাদেশ সংকটে পড়বে বলে বিদেশিরাও আশঙ্কা করছে। ‘এই শঙ্কা থেকে তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) আগামী নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এবং কীভাবে এটিকে নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করা যায় তা জানতে চায়।’
তিনি বলেন, বিশ্বের যেসব দেশ বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, তারা স্পষ্টই জানে যে এদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না এবং বর্তমান ‘দখলকারী সরকারের’ কারণে তারা তাদের প্রতিনিধি, সরকার ও সংসদ নির্বাচন করতে পারবে না। ‘তারা (ইইউ দেশগুলো) এই সত্যটি সম্পর্কে সচেতন এবং তারা এর পিছনের কারণগুলোও জানে।’
নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে খসরু নেতিবাচক জবাব দেন।