ভারতের সঙ্গে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দমনসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে ভারত সফর শেষে এ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
গত ৬ থেকে ৯ আগস্ট বিজেপির আমন্ত্রণে ভারত সফর করে আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভারত সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক জানান, তিনদিনের সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পিষুষ গয়া, বিজেপির সভাপতি জগত প্রকাশ নাড্ডাসহ আরো কিছু রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বিজেপি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে বলেও আশাবাদী তারা। তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলেও জানান ড. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক অনেক উঁচুতে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সম্পর্কে আরো দৃঢ় হচ্ছে। এই সম্পর্ক স্বর্ণালী সময় পার করছে। এ অঞ্চলের মধ্যে ভারত এবং বাংলাদেশের পারস্পারিক সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো।’
তিনি জানান, সফরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গি দমন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে চায় বিজেপি। আওয়ামী লীগকে তারা গুরুত্ব দেয়।
অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সম্পর্কে অনেক ভালো উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই রাজনৈতিক দল এক সঙ্গে কাজ করলে ভবিষ্যতে দুই দেশের আরো ভালো হবে।
মন্ত্রী বলেন, চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অংশীদারিত্বমূলক কিন্তু ভারতের সাথে সম্পর্ক আত্মিক। তবে জামায়াত এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
বাংলাদেশে কী হচ্ছে ভারত তা জানে উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচনে ভারতের কিছু করার নেই তবে তারা মনে করে, সংবিধান অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
এসময় প্রতিনিধি দলের সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখতে একযোগে কাজ করবে ভারত ও বাংলাদেশ। এ অঞ্চলে শান্তি শৃঙ্খলা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকায় সন্তুষ্ট তারা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন স্থিতিশীলতা থাকে সেটি চায় ভারত। ১০ ট্রাক অস্ত্র আনা হয়েছে বিএনপির আমলে। ওই আমলে তারা উদ্বিগ্ন ছিলো বলে জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে সংখ্যালঘুরা ভালো আছে। উগ্রবাদীদের পাশের দেশকে ক্ষতি করতে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে দেবে না বর্তমান সরকার- এই ঘোষণাতে সন্তুষ্ট ভারত।
গত ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আরমা দত্ত এমপি ও অধ্যাপক মেরিনা জাহান ভারত যান।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ‘বিজেপিকে জানুন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলটির আমন্ত্রণে প্রতিনিধি দলটি নয়াদিল্লি সফর করে। পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি বুধবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেশে ফিরে।