মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার ও জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সংঘাতের জেরে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এবং ভারতে ফের শরণার্থীদের জোয়ার আসার শঙ্কা রয়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং দক্ষিণ ও মধ্যএশিয়া বিভাগের প্রধান ডোনাল্ড লু এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছেন।
গত শনিবার রাজধানী ওয়াশিংটনে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে ভারতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিনিধিকে এশিয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে বিস্তারিত এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর লোকজনের ব্যাপক হারে শরণার্থী হওয়ার শঙ্কা এবং বাংলাদেশ ও ভারতে সে সম্পর্কিত সম্ভাব্য চাপ সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড লু বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি। কক্সবাজারে যে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির রয়েছে, সেটি এই মুহূর্তে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির এবং সেই শিবিরটিও আমি দেখেছি। তাই সেখানকার রোহিঙ্গা শরণার্থী, বার্মার (মিয়ানমারের) অস্থিতিশীলতা, ওই অঞ্চলে সেই অস্থিতিশীলতার প্রভাব— প্রভৃতি বিষয় কাছ থেকে দেখা এবং এ সম্পর্কে জানা-বোঝার সুযোগ আমার হয়েছে।’
‘সেসব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমি বলতে পারি, সম্প্রতি মিয়ানমারে যে সংঘাত শুরু হয়েছে— সামনের দিনগুলোতে তা নিরসনের কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই এবং সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশে নতুন করে শরণার্থীদের জোয়ার আসার ঝুঁকি রয়েছে। আর শরণার্থীদের জোয়ার শুরু হলে বঙ্গপোসাগর উপকূলের এই তিন দেশের নিরাপত্তা স্বাভাবিকভাবেই সংকটাপন্ন হবে এবং এই নিয়ে দুশ্চিন্তার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে বলে আমি মনে করি।’
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্র অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।