আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতার জন্য বেপরোয়া হয়ে গেছে, বেসামাল হয়ে গেছে। বিদেশিদের কাছে নালিশ করতে করতে কিছুই আর বাকি নেই। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে পাইলেন কী? ঘোড়ার ডিম।’
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের মুখ শুকিয়ে গেছে। এখন আর নালিশে কাজ হয় না। বিএনপি নালিশ পার্টি থেকে এখন খাই খাই পার্টিতে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতার জন্য তারা বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাদের এখন প্রধান লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা।’
রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কাদের।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি একজন প্যাথলজিক্যাল লায়ার (স্বভাবজাত মিথ্যাবাদী)। আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম সজ্জন ব্যক্তি কিন্তু তিনি কথাবার্তায় বড় বেসামাল। এত মিথ্যা তিনি বলতে পারেন। এত বিষ তার মুখে ভাবতেই অবাক লাগে। দেখলে ভদ্র লোক মনে হয়। আসলে মির্জা ফখরুল প্যাথলজিক্যাল লায়ার।
তিনি বলেন, ‘এ মিথ্যাবাদী (ফখরুল) বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে আওয়ামী লীগ নাকি ১০টি আসনও পাবে না। একজন শিক্ষক কীভাবে এতো মিথ্যা কথা বলে আমার বুঝে আসে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীতে এসে ফখরুল সাহেব নিজে যে ভাষায় কথা বলেছেন তা নিন্দনীয়। তিনি গালিগালাজ করেছেন। নোয়াখালীর মানুষ দিনের বেলায় আলো দেখে। তারা সত্য মিথ্যা জানে। আপনারা (বিএনপি) দিনের আলোয় অন্ধকার দেখেন। নোয়াখালী আগে ছিল বিএনপির ঘাঁটি। এই ঘাঁটি আমরা ভেঙে দিয়েছি। মারামারি, গোলাগুলি করে নয়। আমরা জনগণের জন্য কাজ করে সেই ঘাঁটি ভেঙে দিয়েছি। আমার উন্নয়ন মানুষ চোখে দেখছে, সব চোখের সামনে আছে। শেখ হাসিনার উছিলায় অন্ধকার থেকে আলো জ্বালিয়েছি।
২০০৮ সালের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘২০০৮ সালে মির্জা ফখরুল ও তার নেত্রী আওয়ামী লীগকে মাত্র ৩০টি আসন দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে দেখা গেলো বিএনপিই ৩০টি আসন পেয়েছে। আল্লাহর কী হুকুম তারা যে ৩০ আসন আওয়ামী লীগকে দিতে চেয়েছিল তা তারাই পেয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকের দিনক্ষণ লিখে রাখেন বলে গেলাম, দেশে এখন ভোট হলে শেখ হাসিনাই জিতবে। দেশের ৭০ শতাংশ লোক তাকেই ভোট দেবে। ৭৫-এর পরে বাংলাদেশে একমাত্র অর্জন শেখ হাসিনা।’
বিএনপিকে ভোটচোর উপাধি দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির এখন অন্তর্জ্বালা। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, একদিনে ১০০ সেতুর উদ্বোধন বিএনপির অন্তরে জ্বালার সৃষ্টি করেছে। তারা জনগণকে বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, দিয়েছে শুধু খাম্বা। তাদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়, তারা ভোট চোর, ভোট জালিয়াতি করে ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা ভুয়া ভোটার করে প্রতারণা করে।’
প্রয়াত মওদুদ আহমদের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভোটের দিন সকাল সাড়ে ১০টায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সিরাজপুর ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বিএনপি নেতাদের বলেছিলেন, এখনো ভোট শেষ হয়নি? সে দল এখন সুষ্ঠু ভোটের কথা বলে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিদেশিদের বলেছি, আপনারা পর্যবেক্ষক পাঠাবেন আমরা সুষ্ঠু ভোট উপহার দেবো। কারণ তাদের কারও দেশেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি নেই, আমাদের দেশেও আদালতের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে গেছে; সেটা আর জীবিত হবে না।’
অনুষ্ঠানে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম চৌধুরী, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
এদিন সকালে নবনির্মিত বসুরহাট পৌর বাস টার্মিনাল ও পৌরসভার ৭৩৫টি নতুন স্থাপিত সোলার বাতির উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের। পরে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেন তিনি।