আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামী ১০০ দিন দেশটাকে পাহারা দিতে হবে। কারণ, দেশটা বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে ওরা (বিএনপি)। ক্ষমতা পাহারা দিতে হবে না, ক্ষমতার পাহারাদার জনগণ। কিন্তু দেশটাকে পাহারা দিতে হবে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কার্যকরী সভাপতি কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র অরুন সরকার রানা এবং যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মানিক লাল ঘোষসহ অনেকে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা ভেবেছে ঢাকা শহরে কয়েকটা সমাবেশ করে, মানববন্ধন করে এবং সারাদেশ থেকে তাদের অগ্নিসন্ত্রাসীদের জড়ো করে সরকার হটিয়ে দেবে। এটা আওয়ামী লীগ সরকার… শেখ হাসিনার সরকার।
তিনি বলেন, কয়েকটা মানববন্ধন করে, নয়া পল্টনে ২০/৩০ হাজার মানুষ জড়ো করে কিংবা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে এই সরকার হটানো সম্ভব না। আপনারা ২০১৩-১৪ সালেও তো অনেক চেষ্টা করেছিলেন। বহু গাড়ি ও মানুষ পুড়িয়েছিলেন; তবুও শেখ হাসিনাকে হঠাতে পারেননি।
তাদের লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া নয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, তারা জানে নির্বাচন হলেও তাদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়। তারা যে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে সেখানে মাছ তারা শিকার করতে পারবে না, শিকার করবে অন্যরা। সেটিও তারা জানে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা এবং বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে দেশটাকে তুলে দেওয়া ও দেশের সম্পদটাও তুলে দেওয়া।’
বিএনপির বিরুদ্ধে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম বিএনপি-জামায়াত যখন নির্বাচনে আসে তখন তারা ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি করে। জামায়াততো ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি করে। কিন্তু ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ মারা হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তা নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের মুখে এখন একটিও কথা নেই।
ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তারেক জিয়া নির্দেশ দেয় এটি(ফিলিস্তিন ইস্যু) নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ বিশ্ব মোড়লরা অখুশি হতে পারে। এজন্য তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলেন না। যারা বিশ্ব মোড়লরা অখুশি হবে বলে একটি শব্দ উচ্চারণ করেন না, তারা সুযোগ পেলে দেশটাকে বিক্রি করে দেবে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করার জন্য। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে। আশা করি বিএনপিও সেখানে অংশগ্রহণ করবে এবং তারা তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল আর যাই হোক, মিথ্যা কথা বললেও, যেটা বিশ্বাস করে না সেটি মুখে বললেও এবং নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা বললেও তিনি ভদ্রলোক। তাই তাকে বলব অত উঁচু গলায় কথা বলবেন না। আপনি এমপি হওয়ার পরও আপনার দল আপনাকে শপথ নিতে দেয়নি। আপনার দল এমপিদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদেরকে পদত্যাগ করিয়েছে, তবুও কোনো লাভ হয়নি। সুতরাং আপনার দলের মূল নেতারা বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া চায় না আপনারা নির্বাচনে এসে ভালো ফল করুন কিংবা এমপি হোন।
‘সুতরাং ফখরুল সাহেবদের অনুরোধ জানাব, খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার হয়ে কাজ করবেন না। রাজনীতিবিদ হিসেবে এবং দেশের স্বার্থে কাজ করুন। তাহলে দেশ উপকৃত হবে’, যোগ করেন হাছান মাহমুদ।