পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে চিঠি দিয়েছেন জাতীয় পার্টি (জেপি) মনোনীত বাইসাইকেল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মো. মাহিবুল হোসেন মাহিম। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ করেন তিনি।
ভোটারদের প্রকাশ্যে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে অভিযোগ দিয়ে যান তিনি।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আমি মো. মাহিবুল হোসেন, ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচন-২০২৩-এ জাতীয় পার্টি-জেপি মনোনীত বাইসাইকেল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ছিলাম। অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, যেখানে শতকরা ৮০ শতাংশ ভোট আমার পাওয়ার কথা, সেখানে আমার প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ফাইজুর রশিদ। পরে পৌরসভা নির্বাচনের আগের দিন রাতে পাঁচটি কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার লাইন কেটে ইভিএমে ভোট কারচুপি করেছে। যা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে অকপটে স্বীকার করেছেন। চ্যানেল২৪-এর ভিডিও ফুটেজ আপনার সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হোয়াটসঅ্যাপে সংযুক্ত করলাম।
মেয়র প্রার্থী মাহিবুল অভিযোগে জানান, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশপাশের জেলা এবং উপজেলা থেকে বহু সন্ত্রাসী এনে ভান্ডারিয়ায় একটি ভয়াবহ ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, যা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার অবহিত করেও আমি কোনো প্রতিকার পাই নাই। পক্ষান্তরে আমার ভোটের মাঠ নেতাকর্মী শূন্য করতে নির্বাচনের দুই দিন আগে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আমার বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অ্যারেস্ট করে আমার নির্বাচনকে ব্যাহত করা হয়। সিসি ক্যামেরার লাইন কাটা পাঁচটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখার ব্যাপারেও নির্বাচন কমিশন কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ফাইজুর রশিদ নির্বাচনের দিন বাকি চারটি কেন্দ্রে পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১৫ লঙ্ঘনপূর্বক কেন্দ্র দখল করে। তার পক্ষের দুষ্কৃতকারীরা ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষে প্রবেশ করে। এরপর সন্ত্রাসী স্টাইলে ভোটারদের বাইসাইকেলের ভোট ইভিএমের লাল বাটনে টিপ দিয়ে বাতিল করে। এছাড়া নৌকা প্রতীকে সবুজ বাটনে টিপ দিয়ে ভোট কারচুপির আশ্রয় নেয়।
অভিযোগে তিনি আরও বলেন, আমার পোলিং এজেন্টরা প্রতিবাদ করলেও অনৈতিক সুবিধা নেওয়া প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার তা আমলে নেননি। কাজেই ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচন-২০২৩ সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমি এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনরায় ব্যালট পেপারে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করার অনুরোধ করছি।
বাইসাইকেল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী বলেন, যেহেতু সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হয়নি, সেহেতু তদন্তসাপেক্ষে ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে সিইসি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।