সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. তৌহিদুল ইসলামের প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সে ‘ভেরি গুড অফিসার’ ও ‘তুখোড় ছেলে’। একটি দল তৌহিদুলের বিপক্ষে লেগেছে। তবে তিনি যত দিন (মন্ত্রী হিসেবে) আছেন, তত দিন তৌহিদুলকে ডিফেন্ড করে যাবেন বলে জানান তিনি।
শনিবার(২১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় সিলেটে সুরমা নদীর চর খনন কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা জানান। এর আগে সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের চানপুর খেয়াঘাট এলাকায় নদীর খননকাজের উদ্বোধন করা হয়।
কূটনীতিক তৌহিদুলের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সে আমাদের অ্যাম্বাসেডর ইন সিঙ্গাপুর। তাঁকে আমরা ভিয়েনাতে দিতে চাই। সেখানে মাল্টি ন্যাচারাল কাজ আছে আমাদের ধারণা। সারা দেশেই বোধ হয় এই ক্যারেক্টার, আমরা খালি (কেবল) মানুষকে নিচে নামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগি। আর মিডিয়াও ওই লাইনেই আছে। ওপরে ওঠানোর চেষ্টা করে না, খালি নামানোর জন্য। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনেক ডিপ্লোম্যাট আছে, আমাদের একজন ডিপ্লোম্যাট, হি (তৌহিদুল) ইজ সাকসেসফুল।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সে মেডিকেল ডাক্তার, সে ঢাকা থেকে এমবিবিএস পাস করে, সে ফার্স্ট হয়। তারপর সে যখন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পরীক্ষা দেয়, ওইটাতেও সারা বাংলাদেশে ফার্স্ট হয়। তারপরে তার ব্যাচের ফার্স্ট বয় সে। অত্যন্ত ভালো, তুখোড় ছেলে। এখন ওরে টেনে কীভাবে নামানো যায়, এ জন্য তাঁর মন্ত্রণালয়ের লোকজন, তাঁরই বন্ধুবান্ধবরা কন্টিনিউয়াসলি চেষ্টা করে। তাঁর (তৌহিদুল) শত্রু আছে।
তৌহিদুলকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে এমনই ইঙ্গিত করে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সে(তৌহিদুল) যখন মিলানে কনসাল জেনারেল ছিল, কনসাল জেনারেল থাকা অবস্থায় কোনো একটা মেয়েকে তাঁর পেছনে লাগিয়ে দেয়। লাগিয়ে দিয়ে একটা কেলেঙ্কারির চেষ্টা করে। তখন তাকে উইথড্র করা হয়, সাসপেন্ড করা হয়, অনেক ইনভেস্টিগেশন করা হয়, সরকারের অনেক টাকা খরচ করা হয়। পরে দেখা যায় এক্কেরে বানোয়াট, এক্কেরে অলীক। তাঁর (তৌহিদুল) প্রমোশন হয়, তারপর অ্যাম্বাসেডর হয়।’
‘এখন তাঁর বিরুদ্ধে আবার লাগছে একদল, তাঁরই বন্ধুবান্ধব হবে। আর না হয় পত্রিকায় এগুলো গেল কীভাবে? হি ইজ অ্যা ভেরি গুড অফিসার। আমি যদ্দিন আছি, আই উইল ডিফেন্ড হিম’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে ভিয়েনা মিশনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পদ শূন্য আছে। এ পদে কূটনীতিক তৌহিদুলকে নিয়োগ দিয়ে এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব ভিয়েনায় পাঠায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভিয়েনার সরকার তৌহিদুলকে গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে চিঠি লিখে তৌহিদুলকে গ্রহণ করতে অনুরোধ জানালেও কোন ইতিবাচক ফলাফল আসেনি।
কূটনীতিক মো. তৌহিদুল ইসলামকে নিয়ে অভিযোগ উঠেছে ২০১৩ সালে ইতালির মিলানে কনসাল জেনারেল হিসেবে কর্মরত থাকাকালে এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ওই অভিযোগের কারণেই রাষ্ট্রদূত হিসেবে তৌহিদুলকে ভিয়েনা গ্রহণ করছে না বলে কূটনীতি-সংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা।