কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। তবে প্রশ্ন উঠছে দুর্ঘটনার দায় আসলে কার ছিলো।
এ ঘটনায় নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। তাঁরা হলেন– ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সুজন মিয়া (৩৫), তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩০), তাঁদের দুই ছেলে সজীব মিয়া (১৪) ও ইসমাইল মিয়া (১০)। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামের আছির উদ্দিন (৩০), মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের রাসেল মিয়া (২১), চানপুর গ্রামের সাইমন মিয়া (২৬), ভৈরব পৌর শহরের টিনপট্টি এলাকার বাসিন্দা সুবোধ শীল (৪৫), ভৈরব যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ জালাল আহমেদ, ঢাকা কলেজের ছাত্র ভৈরবের রাধানগর গ্রামের আফজাল হোসেন (২৩), রানীরবাজারের সবুজ চন্দ্র শীল (৫০), শ্রীনগরের রাব্বি মিয়া।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মেরেঙ্গা গ্রামের হোসনা আক্তার, কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুরের ইমারুল কবীর (২২) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বরইছড়া এলাকার নিজাম উদ্দিন সরকার।
এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে রেল সংশ্লিষ্ট তিনজনকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বরখাস্ত করা তিনজন হলেন— যাত্রীবাহী ট্রেনের পেছন দিকে ধাক্কা দেওয়া মালবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও গার্ড।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাতে রেলওয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার সিরাজ-উদ-দৌলা খান গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ ছাড়াও দুর্ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুইটি পৃথক কমিটি গঠন করেছে বলেও জানান তিনি।
সিরাজ-উদ-দৌলা খান বলেন, ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলওয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ আলাদাভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ঢাকা বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা, বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার লোকোমোটিভ, বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ এবং বিভাগীয় সিগনাল ও টেলিকমিউনিকেশন প্রকৌশলী।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- রেলওয়ের সিওপিস মো. শহিদুল ইসলাম, চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, আরমান হোসেন, সিএসপি তুষার ও চিফ মেডিক্যাল অফিসার আহাদ আলী সরকার।
এর আগে সোমবার বিকালে আন্তঃনগর এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার সাত ঘণ্টা পর ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সোমবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকা থেকে সিলেটগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন দিয়ে অতিক্রম করেছে।
দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে রেল কর্তৃপক্ষ দেখেছে, মালবাহী ট্রেনটির চালক থামার সংকেত উপেক্ষা করে দ্রুত ট্রেনটি চালিয়ে এসে এগারসিন্দুর ট্রেনটিকে ধাক্কা দেন।