28 C
Dhaka
Saturday, November 16, 2024

মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকলেন তসলিমা নাসরিন;’প্রতারণা’র করে পঙ্গুত্ব বরণের অভিযোগ

- Advertisement -

লেখিকা তসলিমা নাসরিন এবার ডাক্তারের ‘ভুল’ সিদ্ধান্তে পঙ্গু হতে চলেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এমন অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, যে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেই সমস্যার ট্রিটমেন্ট না করে ক্রমাগত মিথ্যে কথা বলে আমার শরীরের সুস্থ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে নেয়া হয়েছে।

তসলিমা নাসরিনের ভাষ্য, মানুষকে বিশ্বাস করার ফল কী হতে পারে, যারা বন্ধু নয় তাদের বন্ধু ভাবার ফল কী হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। নিজের জীবন দিয়ে টের পেলাম। হাসপাতালের এক ডাক্তারকে বিশ্বাস করেছিলাম। ভেবেছিলাম সে বোধ হয় বন্ধু, তাকে জানিয়েছিলাম যে পড়ে গিয়েছিলাম ঘরে, এক্সরে করতে হবে। সেই বন্ধু আমাকে পাঠিয়ে দিলো তার হাসপাতালের অর্থপেডিক ডাক্তারের কাছে যিনি হিপ রিপ্লেসমেন্টের এক্সপার্ট। সেই এক্সপার্ট শুরু থেকে আমার ফিমারের সামান্য ফ্র্যাকচারের ফিক্সেশান ট্রিটমেন্ট না করে আমার হিপ রিপ্লেসমেন্ট করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। আমি বাধা দিয়েছি। তিনি বারবার এসেছেন আমাকে কনভিন্স করতে। তিন চারজন ডাক্তারকে পাঠিয়েছেন কনভিন্স করতে। আমাকে কোনো সময় দেয়া হয়নি চিন্তা করতে, কারও সাথে পরামর্শ করতে বা শুভাকাংখীদের কারো সাথে কথা বলতে।

ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও বলেন, যেসব কারণে হিপ রিপ্লেসমেন্ট করতে হয় তার একটি কারণও ছিল না। আমার জয়েন্টে কোনও ধরনের রোগ ছিল না। জয়েন্ট আমার চমৎকার ছিল, কোনোদিন কোনো পেইন ছিল না। যে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেই সমস্যার ট্রিটমেন্ট না করে ক্রমাগত মিথ্যে কথা বলে আমার শরীরের সুস্থ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে নেয়া হয়েছে। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না বড় ডাক্তাররা এমন ভয়াবহ ক্রাইম করতে পারেন। আর আমি জানি না আমারও বুদ্ধিসুদ্ধি কোথায় উবে গিয়েছিল যে এমন ক্রাইমের শিকার হতে নিজেকে দিলাম!

এর আগে এক পোস্টে তসলিমা নাসরিন বলেন, হাসপাতালের বেডে আমার শুয়ে থাকার ছবি দেখে অনেকে ভেবেছে আমার বোধহয় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়েছে। না, সেসব কিছুই হয়নি। সেদিন ওভারসাইজ পাজামা পরে হাঁটছিলাম ঘরে, পাজামা চপ্পলে আটকে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলাম। অগত্যা যা করতে হয়, করেছি। হাঁটুতে ব্যথা হচ্ছিল, আইস্প্যাক দিয়েছি, ভলিনি স্প্রে করেছি। মনে হলো হাঁটুর লিগামেন্টে হয়তো লেগেছে, কোনো হাসপাতালে গিয়ে এক্সরে করে দেখি কী হলো। গেলাম হাসপাতালে। এক্সরে আর সিটিস্ক্যান করে হাড়ের ডাক্তার বলে দিলেন, পায়ের ফিমার নামের হাড়টির গলায় একখানা ক্র্যাক হয়েছে। এর চিকিৎসা কী, চিকিৎসার জন্য ডাক্তার দু’টো অপশন দিলেন, প্রথম অপশন ইন্টারনাল ফিক্সেশান, ফাটলের জায়গাটা স্ক্রু লাগিয়ে ফিক্স করে দেবেন। দ্বিতীয় অপশন হিপ রিপ্লেসমেন্ট, আমার হিপ কেটে ফেলে দিয়ে কিছু প্লাস্টিক মেটাল দিয়ে একটা নকল হিপ বানিয়ে দেবেন। কিন্তু ইন্টারনাল ফিক্সেশান এর বিপক্ষে অজস্র বাজে কথা, এবং হিপ রিপ্লেসমেন্টের পক্ষে অজস্র ভালো কথা বললেন আমার কানের কাছে।

আমি তারপরও প্রথম অপশনই নেবো, যেটিকে সত্যিকারের ট্রিটমেন্ট বলে জানি। জোর দিয়ে বললাম, ফিক্সেশান করবো। ডাক্তার খুশি হলেন না ততটা। বললেন ফিক্সেশানে সবসময় ফিক্স হয় না, ৮০% কাজ হয়, কিন্তু ২০ % ফেইল করে। আমি বললাম, দেখা তো যাক ফিক্স হয় কিনা, হয়তো হবে।’ সার্জন বললেন, ‘ফিক্স না হলে কিন্তু আবার অপারেশন করতে হবে, আবার ওই হিপ রিপ্লেসমেন্টেই যেতে হবে। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গেলাম।

পোস্টে লেখিকা আরও বলেন, আচমকা সার্জন এসে বললেন, শুনুন, হিপ রিপ্লেসমেন্ট ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। করলে ওটাই করবো। একটুও ভাববেন না রিপ্লেসমেন্টের পরদিনই আপনি হেঁটে বাড়ি চলে যেতে পারবেন। আমি সেকেন্ড অপিনিয়নের জন্য সময় চাইলাম। সার্জন খুশি হলেন না। বললেন, অপারেশন এক্ষুনি না করলে প্রব্লেম, ইনফেকশন হয়ে যাবে, এটা সেটা। হাসপাতালের অন্য দু’জন ডাক্তার যাদের আমি চিনতাম, তারাও আমাকে চাপ দিলেন সার্জনের উপদেশ মেনে নিতে, কারণ উনি অনেক ‘বড় সার্জন’। অগত্যা আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমাকে রাজি হতে বাধ্য হতে হলো। তারপর কী হলো, আমার হিপ জয়েন্ট কেটে ফেলে দিয়ে টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট করা হলো। একটা পঙ্গু মানুষের জীবন আমাকে দেয়া হলো।

চেতন ফিরলে ব্যাপারটার আরও ভেতরে গিয়ে দেখলাম, যাদের হিপ জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যথা, বছরের পর বছর হাঁটতে বা চলতে ফিরতে পারে না, হিপ জয়েন্ট যাদের স্টিফ হয়ে গেছে জয়েন্টের রোগে, রিউমাটয়েড আর্থাইটিস, জয়েন্টে টিউমার বা ক্যান্সার–তাদের, সেই অতি বয়স্ক মানুষদের, টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট করা হয়, কিছুদিন জয়েন্টের যন্ত্রণা কমিয়ে হাঁটা চলা করতে যেন পারে। আমি ছিলাম এক্সারসাইজ করা প্রচণ্ড অ্যাক্টিভ মানুষ, সাইক্লিং, সুইমিং, ট্রেড মিল করছি, দৌড়াচ্ছি। শরীর থেকে ডায়বেটিস, ব্লাড প্রেশার, ফাইব্রোসিস উবে গেছে। সেই আমাকে সান্ত্বনা দেয়া হচ্ছে, চিন্তার কিছু নেই, তুমি হাঁটতে পারবে। ফাঁকে এও বলে দেয়া হলো তবে, কমোডে বসতে পারবে না, উবু হতে পারবে না, পায়ের ওপর পা রাখতে পারবে না, ওজন বহন করতে পারবে না, নরমাল চেয়ারে বসতে পারবে না, এরকম হাজারো রেস্ট্রিকশন। এ কেমন জীবন আমাকে দেয়া হলো! এই পঙ্গু জীবন পেতে কি আমি প্রাইভেট হাসপাতালে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করতে এসেছিলাম!

তসলিমা জানান, যখন বুঝলাম ডাক্তার ভীষণ অন্যায় করেছেন, আমাকে ভুল কথা বলে, ভয় দেখিয়ে আমার হিপ কেটে নিয়েছেন, আমি জিজ্ঞেস করেছি, যে কারণে হিপ রিপ্লেসমেন্ট করা হয়, তার একটি রোগও আমার ছিল না, আমার জয়েন্টে কোনও ব্যথা ছিল না, কোনো আরথ্রাইটিস ছিল না, নেক ফিমারের ফিক্সেশন করতে গিয়ে হিপ জয়েন্ট কেটে কেন ফেলে দিলেন? বললেন তার নাকি মনে হয়েছে ফিক্সেশান কাজ করবে না। একবার ট্রাই করে দেখা উচিত ছিল না? তার উত্তর, ফিক্সড না হলে আবার অপারেশন করতে হতো, সেই ঝামেলায় না গিয়ে পরে যেটা করতে হবে, সেটা আগেই করে দিলাম। আমেরিকানরা অল্প অল্প করে এগোয়, আমরা একটু এগ্রেসিভ, আমরা আগেই শেষটা করে দিই। কিন্তু অপারেশনের দিন তো বললেন, অন্য কোনো অপশন নেই হিপ রিপ্লেসমেন্ট ছাড়া। উত্তর নেই।

পোস্টের শেষে এই লেখিকা বলেন, উপদেশ এলো, আমি যেন একটু পজিটিভ হই। পঙ্গু জীবন নিয়ে ঠিক কী করে পজিটিভ হওয়া যায়, সেটা বুঝতে পারছি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে, একটুও বাড়িয়ে বলছি না, মাথায় ব্যথা পেয়ে এসেছিলাম চিকিৎসার জন্য, আমার মাথাটা কেটে নেয়া হয়েছে। সার্জনদের যুক্তি হলো, মাথা ফেলে দিলে মাথা ব্যথা করবে না। প্রাইভেট হাসপাতালের টার্গেট মার্কেটের শিকার হলাম। লেখক এবং ডাক্তার হিসেবে হাসপাতালে আমার নাম লেখা হয়নি। ‘বাংলাদেশি রোগী’ হিসেবে লেখা হয়েছে।

- Advertisement -
ফেস দ্যা পিপল লাইভ টক শো উইথ সাইফুর সাগর
Video thumbnail
এই উপদেষ্টাদের কাজের গতি শামুকের গতির চেয়েও খারাপ! উ'ত্তে'জিত হয়ে যে মন্তব্য করলেন কৃষকদল নেতা বাবুল
11:09
Video thumbnail
টকশোতে সার্জিস আলমের হুং’কা’র! রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দলীয় দলীয় কা’মড়াকা’মড়ি বন্ধ করতে হবে!
08:39
Video thumbnail
এই উপদেষ্টারা থাকলে রাষ্ট্রসংস্কার হবে না! অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে ক'ঠো'র মন্তব্য রাশেদ খানের!
12:49
Video thumbnail
সিন্ডিকেটগুলোর শুধুমাত্র হাত বদল হয়েছে! রাজনৈতিক দলগুলোর উপর যে ক'ঠোর অভিযোগ তুললেন সার্জিস আলম
08:06
Video thumbnail
সাইফুর সাগরের সামনেই ফেস দ্যা পিপল নিয়ে যে ক'ঠো'র মন্তব্য করলেন সার্জিস আলম!
06:15
Video thumbnail
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ১০/১৫ বছর লাগাতার ক্ষমতায় থাকতে চায়? যা বললেন মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন
09:00
Video thumbnail
আমাদের ভাইয়েরা শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের জন্য রাস্তায় নামেনি জী'বন দিতে! সার্জিস আলম
10:51
Video thumbnail
১০০ দিনের সরকার, যা চেয়েছি তা পেয়েছি? নির্বাচন ও আওয়ামী রাজনীতির পুনঃবাসন!!
01:32:05
Video thumbnail
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের দুই পক্ষের সং'ঘ'র্ষ! আ'হ'ত ৫ নিয়ে এ কী বললেন সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট?
09:41
Video thumbnail
এই সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে এ কী দাবি জানালেন সমন্বয়ক আশিকুর রহমান অভি?
09:25

সর্বশেষ

আমাদের সাথে সংযুক্ত হোন

1,600,000FansLike
428FollowersFollow
1,270,000SubscribersSubscribe