ক্ষমতাচ্যুত ও পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত গোপন এক বৈঠকে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের কথপোকথন ফেস দ্যা পিপলের হাতে এসেছে।
ওই কথপোকথনে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই আইজিপিকে বলতে শোনা গেছে, “আপনারা যখন (আওয়ামী লীগ) সংগঠিত হবে, তখন পুলিশের উপস্থিতি আপনাদের সামনে থাকবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
বেনজির আহমেদ আরও বলেন, “বিএনপি, এরশাদ সরকারের আমলে অনেক এমপি পুলিশের মধ্যে তাদের লোক ঢুকিয়েছিল। এসব লোক এখনও পুলিশে রয়েছেন, যারা নিজেদের পার্টির সঙ্গে যুক্ত এবং রাজনৈতিক কাজে সক্রিয়।”
বেনজির বলেন, এই ধরনের পুলিশ সদস্যদের এখনও অনেকেই তাদের কাজে সক্রিয় এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিতে প্রস্তুত।
পুলিশের মনোভাব নিয়ে তিনি বলেন, “এখনকার পুলিশ বাহিনী বেশ হাইলি ডি-মোরালাইজড, বা তাদের মনোবল ভেঙে গেছে। অনেক পুলিশ সদস্য এই সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) প্রতি ক্ষুব্ধ, কারণ তাদের অনেককেই হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা হয়েছে। ৪২৭টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা হয়েছে, অস্ত্রপাতি লুট করা হয়েছে, এমনকি প্রেগনেন্ট কনস্টেবলকেও পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ওরা (পুলিশ) তো এগুলো সহজভাবে নেয়নি।”
তিনি বলেন, লোয়ার র্যাংক বিশেষ করে কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর, এদের একটা বিশাল অংশ খুবই আনহ্যাপি, এটা বলতে পারি। তবে ওই প্রশ্নটা, তাহলে আমাদের ধরে কারা? অ্যারেস্ট করে কারা? ধরে হচ্ছে, ওই পার্টি।
সাবেক এই আইজিপি আরও জানান, ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাহিনীর এক বড় অংশ কর্মস্থল ত্যাগ করেছে, এবং এরপর তাদের অনেককে অকার্যকর জায়গায় পাঠানো হয়েছে। অনেক পুলিশ সদস্য চাকরিচ্যুতও হয়েছেন, আর তাদের জায়গায় রিটায়ার্ড পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেছেন, “এরশাদ, জিয়া, বিএনপি সরকারের সময় যারা চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তারা এখনও পুলিশ বাহিনীতে আছেন। তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়, কিন্তু যখন আওয়ামী লীগ সংগঠিত হবে, তখন তাদেরকে পুলিশ বাহিনীতে খুব সহজেই দেখা যাবে।”
বেনজির আহমেদ শেষ দিকে যুক্ত করেছেন, তিনি তার দলের মধ্যে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন এবং তাদের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার আশা করছেন। “আল্লাহ চাইলে, এই সহযোগিতার মাধ্যমে আরও সুবিধা পাওয়া যাবে,” বলেছেন তিনি।