গেল এক সপ্তাহের সব ঘোষণা নাকচ করে বিদ্যুতের পাইকারি দামই আগেরটাই বহাল থাকছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবির প্রস্তাবনায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেও সেটি আমলে নেয়নি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিইআরসি আয়োজিত বিদ্যুতের দাম ঘোষণা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জালিল একথা জানান।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জানান, সুস্পষ্ট তিন কারণে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদনে বিইআরসি সাড়া দেয়নি। একটি হলো- বিদ্যুতের দাম বাড়লে ভোক্তা পর্যায়ে কী প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে বিপিডিবির আবেদনে কোনো পর্যালোচনা নেই। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, এতে তথ্য-উপাত্তের অস্পষ্টতা এবং তৃতীয়টি হলো- বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কোম্পানিগুলোর সরাসরি বিদ্যুৎ কেনার তথ্য গোপন করা হয়েছে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব খারিজের পর্যবেক্ষণে বিইআরসি ওই তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে।
১. ‘বিদ্যুতে পাইকারি দাম পুনর্নির্ধারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড যে আবেদন করেছে, সেখানে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার পুনর্নির্ধারণের ভোক্তাপর্যায়ে অনিবার্য প্রভাব বিষয়ে বক্তব্য স্পষ্ট নয়। একইসঙ্গে এই মূল্যবৃদ্ধি দ্রব্যমূল্য ও মানুষের জীবনযাত্রায় কী প্রভাব ফেলবে তার ব্যাখ্যা নেই।’
২. ‘দাম বাড়ানোর এই আবেদনে তথ্য-উপাত্তের অস্পষ্টতা আছে। এ কারণে বিপিডির আবেদন যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা যায়নি।’
৩. ‘বিদ্যুতের বৃহৎ ক্রেতা হিসেবে বিপিডিবি ছাড়াও অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ কেনে। বিইআরসির কাছে জমা দেওয়া আবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়নি।’
এই তিন কারণে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার আগেরটাই বহাল রেখে দাম বাড়ানোর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কমিশন।ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর পেছনে এসব কারণ ব্যাখ্যাও করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল।
তিনি বলেন, ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল। আমরা এর মধ্যে অনেকবার বসেছি। আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখেছি। আজকে শেষ দিনে আমরা দাম ঘোষণা করলাম।
সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন, পিডিবি গত ১২ জানুয়ারি বিদ্যুতের পাইকারি দাম পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব জমা দেয়। এর পর ১৮ মে তাদের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি করা হয়েছে। সব পর্যালোচনা করে আজ সকালে সভা করে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের প্রস্তাবের সব বিবেচনা করে দাম পুনর্নির্ধারণ করা হলো না। আগের দামই থাকবে।