আসন্ন রমজানে দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না, এমনই আশা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি রোববার ঢাকার একটি হোটেলে ‘খাদ্য পণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথা জানান।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশে খাদ্যপণ্য মজুত এবং আমদানি ব্যবস্থা যথেষ্ট ভালো আছে। তিনি আরও জানান, রমজান মাসে তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুরের কোনো সংকট হবে না। “ইনশাআল্লাহ, কোনো সমস্যা হবে না,” বলেন তিনি।
তিনি আন্তর্জাতিক বাজারের দ্রব্যের দাম কমার দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, দেশের বাজারে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তিনি আরও জানান, খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে এবং এখন সেগুলোর বাস্তবায়নের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ভোক্তাদের সঠিকভাবে সাহায্য করার জন্য কার্যকর নীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তিনি বাজারের সঠিক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্যবসায়ীদের সহায়তা প্রদানকারী টিসিবি, ট্যারিফ কমিশন এবং এনবিআর-এর কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি স্থানীয় উৎপাদক, আমদানিকারক এবং ব্যবসায়ীদের বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি রাইস ব্র্যান অয়েলের রপ্তানি কঠিন করার বিষয়ে কথা বলেন এবং জানান যে, বর্তমানে ২৫ শতাংশ রেগুলেটরি ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। এই তেল বাজারে থাকলে তেলের দাম আরও স্থিতিশীল হবে।
প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিযোগিতা কমিশনকে স্বাধীন করার উদ্যোগ নিচ্ছে, এমনও জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নীতিগুলো মূলত ধনী শ্রেণির সুবিধার জন্য তৈরি হয়েছে, সাধারণ মানুষের জন্য নয়। গত ১৫ বছরে দেশে বড় বিনিয়োগ হয়নি, ফলে কর্মসংস্থানও বাড়েনি। বিনিয়োগ না বাড়লে ট্যাক্স কালেকশন কীভাবে বাড়বে?”
শেখ বশিরউদ্দীন ব্যাংকগুলোকে ‘অপরাধ প্রতিষ্ঠানে’ পরিণত করা এবং ইসলামী ব্যাংক ও টিসিবি’র ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, টিসিবির তালিকায় ৪৩ লাখ ভুয়া উপকারভোগী পাওয়া গেছে, যা আরও যাচাই করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম কি-নোট উপস্থাপন করেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুর রহিম খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান সংগঠক সারজিস আলম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।