বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে উঠেছে অনিয়মের অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের কার্যক্রমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সংগঠনটির একাংশের মধ্যে। সংগঠনের অভ্যন্তরে দাঁড়িয়ে গেছে পক্ষ-বিপক্ষ। এ অবস্থাই নিজের রাগ-ক্ষোভ-অভিমানে সংগঠনকে বিদায় জানালেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন।
মঙ্গলবার(১৩ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এমন ঘোষণা দেন।
ফেসবুকে পোস্টে মেশকাত জানান, যেই সংগঠন করে জীবনের সবটুকু সময় ব্যয় করেছি কিন্তু হতাশা, মানসিক যন্ত্রণা আমাকে ধুঁকে ধুঁকে শেষ করে দিচ্ছে। যদি বিএনপি-জামায়াতের কোনো লোক হতো তাহলে তাকে প্রতিহত করার ক্ষমতা আমি রাখি। কিন্তু যখন নিজ দলের লোক কষ্ট দেয় তখন কষ্টের আর শেষ থাকে না। আজ শুধু নিজেকেই শেষ করিনি, পরিবারের সবাইকে ঠকিয়েছি।
মেশকাত সেই পোস্টে লেখেন, খুব অভিমান থেকেই বলছি বিদায় ছাত্রলীগ। যদি বেঁচে থাকি বাকি জীবনটা পার্টির জন্য ব্যয় করে যাব। আর পার্টির দুঃসময়ে যদি আমাকে প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশে থেকে রাজপথে লড়ব। ভালো থাকবেন সবাই।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্ট নিয়ে জানতে চাইলে মেশকাত বলেন, যে দলের জন্য এত ত্যাগ, এত শ্রম দিলাম, সে দলের সভাপতির মুখ থেকে যদি জামায়াত-শিবির ব্লেম খাওয়া লাগে, এটি কষ্টদায়ক। ছাত্রলীগ করব কাদের সঙ্গে, যারা আমাদের জামায়াত-শিবির, বিএনপি বলে। তারা হাজার অনিয়ম করবে, আমরা কিছু বললেই জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট। তাদের সঙ্গে রাজনীতি করা সম্ভব নয়।
ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের কাছে পদত্যাগপত্র দেওয়ার কিছু নেই। তারা নিজেরাই মেয়াদোত্তীর্ণ। তারা আমাকে পদও দেয়নি, দিয়েছে শোভন-রাব্বানী ভাই। আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনার রাজনীতি করি। যদি পার্টির প্রয়োজন হয় আমি অবশ্য মাঠে থাকব।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মেশকাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী।
এর আগে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই হলের ফটকের সামনে নিজের পকেটে থাকা অস্ত্রে চাপ লেগে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। মেশকাতের পকেটে থাকা সেই অস্ত্রটি অবৈধ ছিল বলেও দাবি করে ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত গোয়েন্দারা৷