রাজশাহীর ভদ্রা পারিজাত এলাকায় সংঘটিত মব সৃষ্টি, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট এবং হত্যাচেষ্টার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার। শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ১১টায় নগরীর চিলিস রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী হাবিবা আক্তার মুক্তা সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাবিবা আক্তার মুক্তা অভিযোগ করেন, গত ৩ জুলাই দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে তার একমাত্র মেয়ের জামাইয়ের ভাই মাহমুদ হাসান সিসিল একদল লোক নিয়ে এসে তাদের ফ্ল্যাটের সামনে মব তৈরি করেন। এ সময় তিনি বাড়িতে একা ছিলেন। ওই মব তার ঘরে ঢুকে দুই লাখ টাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে এবং তাকে শারীরিক নির্যাতন করে। মুক্তা বলেন, “ঘটনাটি ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। তাদের আচরণ ও হামলার ধরন ছিল ডাকাতির মতো।”
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর সিসিল বিকেল ৪টার দিকে আবার পুলিশ ও স্থানীয় কিছু মানুষকে নিয়ে এসে তাদের বাড়িতে তল্লাশির ‘নাটক’ করেন, যাতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া যায়। পুরো ঘটনা তাদের বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়েছে। সেই ফুটেজ পুলিশের কাছেও হস্তান্তর করা হয়েছে।
মুক্তা বলেন, “আমি চন্দ্রিমা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশকে সব তথ্য ও ভিডিও ফুটেজ দেওয়া হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও দাবি করেন, “আমার স্বামী, মেয়ে জামাই এবং আমি— আমরা কেউই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। কিন্তু সিসিল, যিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তার উদ্দেশ্য একটাই— আমার জামাই মেহেদী হাসান সিজারকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্পত্তি দখল নেওয়া।”
মুক্তা বলেন, সিজারের বাবা মাহবুব কন্ট্রাকটর নামে রাজশাহীর একজন পরিচিত ঠিকাদার ছিলেন, যিনি ২০২১ সালে মারা যান। তার মৃত্যুর পর রেখে যাওয়া সম্পত্তি নিয়ে সিসিল ও সিজারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধ থেকেই সিসিল ধারাবাহিকভাবে সিজারকে হয়রানি করে আসছে।
তিনি জানান, এর আগে ২৯ জুনও সিসিল একদল লোক নিয়ে সিজারের বাসায় হামলা চালায়। সিজার তখন লুকিয়ে প্রাণে রক্ষা পান। ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও তাদের কাছে রয়েছে।
মুক্তা অভিযোগ করে বলেন, “আমার স্বামী ও আমি যেহেতু সিজারের শ্বশুর-শাশুড়ি, তাই আমাদেরকে জিম্মি করে সিজারকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে সিসিল। এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। এর পেছনে রয়েছে কেবল সম্পত্তি আত্মসাতের ষড়যন্ত্র।”
তিনি সিসিলের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এবং পুলিশের কাছে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সিসিলের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণস্বরূপ কিছু ছবি সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয়। মুক্তা অভিযোগ করেন, সিসিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।