বিচারবহির্ভূত হত্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে র্যাবের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। বলেন, আপনারা যদি চলতি সপ্তাহে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন দেখে থাকেন, র্যাবের দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমানোর অসামান্য অগ্রগতির বিষয়টি সেখানে উঠে এসেছে, আমরাও তা দেখছি। এটা অসাধারণ কাজ।
র্যাবের প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রেখেও র্যাব সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করতে সক্ষম।
আজ রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে আলোচনা এবং দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে র্যাব নিয়ে প্রশংসা করেন লু।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের আগে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন ডোনাল্ড লু।
মার্কিন সরকারের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে যে, কোনো সমস্যা দেখলে আমরা বলব এবং কোথাও পরামর্শ দেওয়ার থাকলে আমরা দেব; কথা বলার স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে আমরা দাঁড়াব। আমরা বাংলাদেশে আমাদের অংশদীরদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে চাই।
নিজের বক্তব্যের শুরুতে ডোনাল্ড লু বাংলায় সালাম দিয়ে বলেন, ‘মনোমুগ্ধকর নদী বা সৈকত এবং অতিথিপরায়ণ মানুষের দেশ বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি এখানে এসেছি আমাদের দুদেশের বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করতে, যখন বর্তমান বিশ্ব শান্তি এবং নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম জন্য করে চলেছে’।
দুপক্ষের মধ্যে ‘খুব গঠনমূলক’ আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা খুশি যে, আমরা মোটামুটি ঐকমত্যে আছি এবং ভবিষ্যতে আরো ভালো দিনের প্রতীক্ষায় আছি। আমাদের যে সম্পৃক্ততা এটা খুব কাজের এবং এর ফলে আমাদের মধ্যে যদি কোনো ধরনের কোনো প্রশ্ন থাকে, সেগুলো আমরা আলোচনার মধ্যে সমাধান করব।
কোনো ধরনের পরামর্শ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সরকারের আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সাজেশন পেলে অবশ্যই আমরা গ্রহণ করি, আমরা তার নমুনাও দেখিয়েছি, আমাদের কোথাও যদি কোনো দুর্বলতা থাকে, নিশ্চিতভাবে আমরা সেগুলো আমলে নেব এবং সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। কারণ, আমরা চাই দেশের মঙ্গল, মানুষের মঙ্গল এবং আমরা চাই আমাদের দেশবাসী অবস্থান যে আরও আরও উন্নত হয়। সুতরাং কেউ যদি আমাকে ভালো সাজেশন দেয়, অবশ্যই আমরা সেটা গ্রহণ করব।
সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার দল আওয়ামী লীগ সবসময় গণতান্ত্রিক মাধ্যমে সরকারে এসেছে। ব্যালটের মাধ্যমে সরকারে এসেছে, কখনও বুলেটের মাধ্যমে আসেনি এবং আমরা এটা বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের জনগণের প্রতি আর আমরা চাই বিশ্বশান্তি। আমরা চাই, সব জায়গাতে যেন শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়, সেজন্য আমরা একটি অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করি।
উল্লেখ্য, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবসহ এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি এই সফরে সে ইস্যুতে আলোচনার উপরেই বিশদ জোর দিয়েছে বাংলাদেশ।