শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

‘শেখ কামালের নীতি-আদর্শ অনুসরণে যুব সমাজ আন্তর্জাতিকভাবে দেশের মর্যাদাকে সমুন্নত করবে’

-বিজ্ঞাপণ-spot_img

শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে কামালের জন্মদিন। কামাল বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিল। একাধারে সে হকি খেলতো, ফুটবল খেলতো, ক্রিকেট খেলতো। আবার সেতার বাজাতো। ভালো গান গাইতে পারতো। নাটকে অংশ গ্রহণ করতো। তার অনেক নাটক করা আছে। উপস্থিত বক্তৃতায় সে সব সময় পুরস্কার পেত।

এত প্রতিভার পাশপাশি শেখ কামাল রাজনৈতিকভাবেও সচেতন ছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শাহীন স্কুল থেকে পাস করে যখন ঢাকা কলেজে পড়তো তখন থেকে সে ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। আমরা সংগঠন করতাম, কখনো কোনো পদ নিয়ে আমাদের চিন্তা ছিল না।

তিনি বলেন, বাবা শিখিয়েছেন মানুষের জন্য রাজনীতি করা। তার আদর্শ নিয়ে আমরা পথ চলতাম। তিনিই আমদের শিখিয়েছিলেন সাদাসিদে জীবন যাপন করতে হবে। কাজেই ‘সিম্পল লিভিং হাই থিংকিং’। এটাই ছিল আমাদের মটো। এটাই আমাদের শিখিয়েছিলেন এবং আমরা সেটাই করতাম।

তিনি বলেন, শেখ কামাল সব সময় অত্যন্ত সাদাসিদেভাবে চলাফেরা করতেন। তার পোশাক পরিচ্ছদ, জীবন যাত্রা খুবই সীমিত ছিল। এমনকি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে তার কোন অহংকার ছিল না। শুধু একজন ক্রীড়াবিদ নয় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার যেমন দূরদর্শীতা ছিল তেমনি লেখাপড়াতেও ছিলেন মেধাবী।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে সেই কথা মেনে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সুসংগঠিত হচ্ছিল এবং শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে কাজ করছিল। ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ধানমন্ডি ১৯ নম্বর রোড, আবাহনী ক্লাব এলাকা ও সাত মসজিদ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার যুব সমাজকে সংগঠিত করার কাজ করেছিলেন। ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ওই রাস্তায় বেরিকেড দেয়ার জন্য সে  বাসা থেকে চলে যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করলে তৎকালীন ইপিআর এর ওয়্যারলেস যোগে তা সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এরপরই বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানী বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তার মাসহ পরিবারের সদস্যদের বন্দি করা হলে কামাল লুকিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে যায় (পরে শেখ জামালও মুক্তিযুদ্ধে চলে যান)।

তিনি বলেন, কামালকে কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন লেখাপড়া করার জন্য তাকে সবরকমের সহযোগিতা করবেন। কামাল তাতে রাজী না হয়ে বরং বলেছে, আমি যুদ্ধ করতে এসেছি যুদ্ধই করবো, ট্রেনিং নেব। সে দেরাদুনে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতী কর্নেল ওসমানীর এডিসি নিযুক্ত হয়। সে এবং মেজর নূর কর্নেল ওসমানীর এডিসি ছিল।

প্রধানমন্ত্রী ও বড় বোন শেখ হাসিনা শেখ কামালের সঙ্গে ছেলে বেলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন, কেননা পিঠেপিঠি ছোট ভাই কামাল যে তার খেলার সাথীও ছিল। ছোট্ট কামালকে নিয়ে কারাগারে বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখতে যাওয়ারও টুকরো স্মৃতির উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, কামালের জন্মের পর পরই আব্বা গ্রেফতার হয়ে যান এবং ’৪৯ সাল থেকে ’৫২ সাল পর্যন্ত বন্দি ছিলেন। কামালের ছোট বেলায় আমি যেমন আব্বাকে দেখে আব্বা আব্বা বলে ছুটে যেতাম ও ঠিক তেমনটা যেতে পারতো না। আমাকে জিগ্যেস করতো,এইভাবে ওর ভেতর সবসময় একটা অতৃপ্তি ছিল। তবে, আব্বা বের হবার পর (কারা মুক্তির) পর তাঁকে যথেষ্ট আদর করতেন কেননা ছোটবেলায় সে বাবার আদর বঞ্চিত হয়েছিল।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কামাল এবং খুনী নূর একই সাথে কর্ণেল ওসমানির এডিসি ছিল। নিয়তির কি নিষ্ঠুর পরিহাস যে এই নূরই প্রথম আসে। কামাল মনে হয় ধোকায় পড়ে গিয়েছিল তাকে দেখে। ভেবেছিল বোধহয় তারা উদ্ধার করতে এসেছে। কিন্তু তারা যে ঘাতক হয়েছে সেটা বোধহয় জানতো না। কারণ প্রথম তারা কামালকে গুলি করে। তারপর একে একে পরিবারের সব সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে।   

শেয়ার করুন

সর্বশেষ নিউজ

‘সন্ত্রাসীদের যদি বিচার না করতে পারেন, সসম্মানে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে চলে যান’

রাজধানীর মিটফোর্ডে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সামনে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও সারাদেশে চলমান হত্যা, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ...

হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের দাবিতে কুবিতে বিক্ষোভ মিছিল

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ব্যবসায়ীকে যুবদল নেতা কর্তৃক নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং দেশব্যাপী অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কুমিল্লা...

জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে যুবদল নেতা কর্তৃক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ ও সারাদেশে অব্যাহত চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসবাদের...

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ

ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে পাথর নিক্ষেপে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ১০টা...

সম্পর্কিত নিউজ

‘সন্ত্রাসীদের যদি বিচার না করতে পারেন, সসম্মানে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে চলে যান’

রাজধানীর মিটফোর্ডে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সামনে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও সারাদেশে চলমান হত্যা, ধর্ষণ ও...

হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের দাবিতে কুবিতে বিক্ষোভ মিছিল

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ব্যবসায়ীকে যুবদল নেতা কর্তৃক নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং দেশব্যাপী...

জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে যুবদল নেতা কর্তৃক...