সাংবাদিকের ওপর হামলা ও মারধরের পরই বিলুপ্ত করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক বিজ্ঞপ্তিতে চবি শাখা ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্তের ঘোষণা দেওয়া হয়।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) কর্মরত এক সাংবাদিককে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মরধর করেছেন। মারধরের শিকার সাংবাদিক মোশাররফ শাহ দৈনিক প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
অপরদিকে মারধরকারীরা চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও বগিভিত্তিক গ্রুপ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) অনুসারী।
মারধরের শিকার সাংবাদিক মোশাররফ শাহ বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমি উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাকে প্রথমে পেছন থেকে ধাক্কা দেন। এরপর ছাত্রলীগ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন তৈরি করেছি তা জানতে চায়।
তিনি বলেন, কয়েকজন আমার কপালে, মুখে কিলঘুষি দেন। বুকে লাথি দেন। হাতেও আঘাত করেন।
মারধরের সময় নেতা-কর্মীরা তাকে পরবর্তীতে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তারা বলেন, আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
ওই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আড়াই বছর পর আজ বিলুপ্ত করা হলো।
ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের অভিযোগ, হল-অনুষদ কমিটি গঠন করতে না পারা, সাড়ে তিন বছরে একটি বর্ধিত সভাও না করাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ানো বিলুপ্ত এই কমিটি পদে পদে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
বিলুপ্ত কমিটির বিরুদ্ধে ১৭০ বার সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।