জামালপুরের বকশীগঞ্জে সন্ত্রাসীদের হামলায় বাংলা নিউজের জেলা প্রতিনিধি এবং একাত্তর টিভির উপজেলা সংবাদ সংগ্রাহক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (১৬ জুন) বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন তালুকদার বাবুল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সাময়িক বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ১৪ জুন বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাটহাটি মোড় এলাকায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর একদল দুষ্কৃতিকারী অতর্কিত হামলা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, গত ১৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
চেয়ারম্যান বাবুর উদ্দেশ্যে চিঠিতে লেখা হয়েছে, উক্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনায় প্রশাসন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আপনার সংশ্লিষ্টতা জোড়ালোভাবে উল্লেখিত হওয়ায় দলীয় ভাবমূর্তি প্রচণ্ডভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আপনার অসাংগঠনিক কার্যক্রম এবং অসদাচরণ প্রকাশ পাওয়ায় আপনাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো এবং সংগঠন থেকে সামরিক বহিষ্কার করা হলো।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আপনাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না এই মর্মে চিঠি পাওয়ার সাত কর্ম দিবসের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের বরাবর জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হলো।
এর আগে গত বুধবার রাতে বকশীগঞ্জ বাজার থেকে নিলক্ষীয়ায় বাড়ি ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। এসময় অতর্কিতভাবে ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলার সময়ের সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ১৪ জুন রাতে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে নাদিমকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় একদল সন্ত্রাসী। এসময় হামলায় সরাসরি অংশ নেন চেয়ারম্যান বাবুর বোনের ছেলে রেজাউল ও বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক রাকিবুল্লাহ রাকিব।
এছাড়া ফুটেজ দেখে মনির রিফাত ও সাইদকে শনাক্ত করা হয়। তারা সবাই চেয়ারম্যান বাবুর অনুসারী। তাদের এরই মধ্যে আটক করেছে পুলিশ।